ব্যবসা ও অর্থনীতিডেস্ক(২৮ডিসেম্বর):বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), বাংলাদেশ ব্যাংক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আলাদাভাবে মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান তৈরি করে। তবে এদের তথ্যে ভিন্নতা দেখা যায়। তথ্য ও উপাত্তের এই সাংঘর্ষিক অবস্থা নিরসনে মূল্যস্ফীতির একক পরিসংখ্যান নির্ধারণের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
এমন কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, খুব দ্রুত মূল্যস্ফীতির অভিন্ন পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর আমরা এই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এখনো তা চলছে। আশা করি শিগগিরই মূল্যস্ফীতির একক তথ্য সব সংস্থার কাছে থাকবে।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান সমিতি আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে তিন দিনের এই সম্মেলন শুরু হয়েছে। চলবে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, দেশে ভোক্তা মূল্যসূচকের ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান নির্ণয় করে থাকে বিবিএস। বিবিএসের পরিসংখ্যানই মূল্যস্ফীতির ও জাতীয় আয়ের একমাত্র পরিসংখ্যান হিসেবে বিবেচ্য।
সাংঘর্ষিক তথ্য–পরিসংখ্যানকে একটি বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, একটি সূত্র এক রকম তথ্য দেয় তো আরেক সূত্র ভিন্ন তথ্য দেয়। এতে বিভ্রান্তি ছড়ায়।
এ বিষয়ে কয়েকটি উদাহরণও দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, জনসংখ্যার গণনা নিয়ে আগে সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) দ্বিমত হতো। গত বছর সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে। রপ্তানি নিয়ে সাংঘর্ষিক তথ্য রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী রপ্তানির পরিসংখ্যান এক রকম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মতে তা আরেক রকম। তবে এই সমস্যা অনেকটা কেটে গেছে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ তথ্য নিয়েও কিছু জটিলতা হয়। বিনিয়োগ বোর্ড দেয় এক রকম তথ্য, বাংলাদেশ ব্যাংক বলে আরেক রকম। এ বিষয়ে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছে। এই জটিলতাও প্রায় কেটে গেছে।
বিবিএসের তথ্য বিতরণব্যবস্থা নিয়েও কিছুটা নাখোশ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিবিএসের প্রকাশনা খুবই ভালো। কিন্তু তাদের তথ্য বিতরণব্যবস্থা খুবই দুর্বল। তথ্য বিতরণের দিকে তাদের আরও মনোযোগী হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি এবং মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম নুরুল ইসলাম। তিনি তথ্যবিভ্রাট প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা যা পড়াই আর সরকার যে ধরনের তথ্য চায়, তার মধ্যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ডের অধ্যাপক শাহজাহান খানকে কাজী মোতাহার হোসেন স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিসংখ্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ শিকদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমান।
নিউজরুম