স্পোর্টস ডেস্ক(২৬ডিসেম্বর): মুখে দাড়ি। প্রথম দেখায় চিনতেই কষ্ট হয়। পারিবারিক ঐতিহ্য মেনেই নাকি দাড়ি রেখেছেন। দাদা-বাবা-নানারা দাড়ি রাখতেন। কারণ যা-ই হোক, চেহারায় পরিবর্তন এনে আসিফ হোসেন খান রাইফেল হাতেও নিজের ভাগ্য খানিক বদলালেন। তিন বছর পর কাল জাতীয় এয়ারগান শ্যুটিংয়ে জিতলেন সোনা।
২০০৯ সালে সর্বশেষ জাতীয় শ্যুটিং ও জাতীয় এয়ারগান শ্যুটিংয়ে সেরা হয়েছিলেন। ২০১০ এসএ গেমসে শেষ মুহূর্তের ভুলে সোনা হাতছাড়া করে পেয়েছিলেন রুপা। ২০১০ ও ২০১১ সালে জাতীয় ও জাতীয় এয়ারগান শ্যুটিংয়ে কখনো দ্বিতীয়, কখনো তৃতীয় হয়েছেন। এ বছর জাতীয় শ্যুটিংয়েও একই পরিণতি। অবশেষে কাল পঞ্চম জাতীয় এয়ারগান শ্যুটিংয়ের প্রথম দিনে আবার আসিফ প্রথম হলেন। যদিও স্কোর তাঁর সেরারও চেয়ে অনেক কম।
‘আসিফ শেষ হয়ে গেছে’, ‘ওকে দিয়ে আর কিছু হবে না’ গত বেশ কিছুদিন বাংলাদেশের শ্যুটিংয়ে উচ্চারিত হয়েছে এই আক্ষেপ। ব্যক্তিজীবনেও পরিবর্তন এসেছে। ২০০২ ম্যানচেস্টার কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী সম্প্রতি বিয়ে করেছেন। দেড় বছর আগে বিকেএসপিতে কোচ হিসেবে নিয়েছেন চাকরি।
কোচ হওয়া মানে আসিফের শ্যুটিং ক্যারিয়ার শেষ বলেই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু পাবনার এই তরুণ আসলেই এক প্রহেলিকা। এই ভালো স্কোর তো এই বাজে স্কোর। যে কারণে আগের মতো আর মনোযোগের কেন্দ্রে থাকেন না। তবে কাল সোনা জেতার পর গুলশান জাতীয় শ্যুটিং রেঞ্জে অনেকে তাঁর সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। অনেকে মিষ্টি খেতে চাইলেন।আসিফ রসিকতা করলেন, ‘ঢাকার নয়, পাবনার মিষ্টি খাওয়াব।’
কিছুদিন পর পরই আসিফকে ঘুরেফিরেই একটা প্রশ্ন শুনতে হয়, ‘আপনি তাহলে ফুরিয়ে যাননি?’ কালও তা শুনে বললেন, ‘আমি ফুরিয়ে যাইনি, এটা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।আপনারাও (সাংবাদিকেরা) ক্লান্ত। সবাই ক্লান্ত। আমি আগের কয়েকটি প্রতিযোগিতায় ভালো করিনি ফাইনালে সমস্যা হওয়ায়। এবার সেই সমস্যাটা হয়নি। তা ছাড়া অনুশীলনও করছি নিয়মিত। তাই সোনা জিতলাম।’
২০০২ সালে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছিলেন ৬০০ তে ৫৮৭ করে। দশ মিটার এয়ার রাইফেলে তাঁর সেরা স্কোর ৫৯৫। কাল বাছাইয়ে করলেন মাত্র ৫৮৯। তবে ফাইনালে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে এগিয়ে থাকলেন চার পয়েন্ট। ৫৮৮ নিয়ে দ্বিতীয় বিকেএসপিরই জসিমুজ্জামান। তৃতীয় গুণধন সিং (৫৮৪)। গত তিনটি জাতীয় শ্যুটিংয়ে সোনা জেতা আবদুল্লাহেল বাকি ৫৮৬ স্কোর করে চতুর্থ হয়েছেন।
শ্যুটারদের পারফরম্যান্সের এই ভাটার মধ্যেই কাল মেয়েদের এয়ার পিস্তলে সোনা জিতেছেন নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের আরমিন আশা।
নিউজরুম