ঢাকা (২৩ ডিসেম্বর) : সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির বাসার দারোয়ান এনামুলকে গ্রেফতার না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। একই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর এনামুলকে ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছে কমিটি।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মো. ছায়েদুল হক। কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, মো. মুজিবুল হক চুন্নু, সানজিদা খানম ও মো. সফিকুল ইসলাম বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকে সাগর-রুনি হত্যা মামলা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ৠাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (ৠাব) পক্ষ থেকে জানানো হয়, হত্যার সঙ্গে দারোয়ান এনামুলের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। এনামুলকে গ্রেফতারের জন্য গুপ্তচর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
কমিটির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু জানান, বৈঠকে কমিটির সভাপতি ছায়েদুল হক জানতে চান, গার্ডকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কেন তাকে ছেড়ে দেওয়া হলো?
তিনি বলেন, যে পুলিশ অফিসার তাকে ছেড়ে দিয়েছে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিটির আগামী বৈঠকে সাগর-রুনি হত্যা মামলার অগ্রগতির পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর জন্য আমদানিকৃত ডাবল কেবিন ২হাজার ৫০০ সিসি পিক-আপ অল্প সময়ের মধ্যে বিকল হয়ে যাওয়ায় এগুলো ফেরত বা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ডোনেশন হিসেবে পুলিশের গাড়ি, আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি গ্রহণ করার বিষয়ে সরকারি খসড়া নীতিমালা আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে পুলিশ সংস্কার আইন দ্রুত প্রণয়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র সচিব সি কিউ কে মুসতাক আহমেদ, মহা-পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, র্যাবের মহা পরিচালক মো. মোখলেছুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতের কোনো এক সময় রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। ওই ঘটনায় ‘অজ্ঞাত পরিচয়` ব্যক্তিদের আসামি করে শেরেবাংলানগর থানায় হত্যামামলা দায়ের করা হয়।
পরদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের খুঁজে বের করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। কিন্তু তদন্তকাজে কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি গোয়েন্দা পুলিশ। আর পুলিশের ব্যর্থতায় হাইকোর্টের নির্দেশে গত ১৮ এপ্রিল এ হত্যা মামলা তদন্তের দায়িত্ব র্যাবকে দেওয়া হয়। আর এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
নিউজরুম