ঢাকা (২৩ ডিসেম্বর) : অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য জনগণের কাছে নাকে খত দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার জন্য বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আ’লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় শ্রমিক লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বিরোধী নেত্রীর উদ্দেশে এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়া ভেবেছিলেন নাকে খত দিয়ে ভারতের তোয়াজ করলেই তাদের সমর্থন পাবেন এবং আগামীতে তিনি ক্ষমতায় যেতে পারবেন। এ জন্যই তিনি ভারতে গিয়ে নাকে খত দিয়ে এসেছেন, এখন থেকে বিদেশী প্রভুরা যেভাবে বলবে সেভাবেই তিনি সব শুনবেন।’
কিন্তু এতে কাজ হবে না উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ‘ক্ষমতায় আসতে চাইলে খালেদা জিয়াকে তার অতীত অপকর্ম ও মিথ্যাচারের জন্য জনগণের কাছে নাকে খত দিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে। জনগণের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে তিনি ক্ষমতায় গেলে আর হাওয়া ভবন সৃষ্টি করবেন না, আর যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবেন না, দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করবেন না। তবেই হয়তো জনগণ আবারও আপনাকে ক্ষমতায় বসাতে পারে। কারণ, বিদেশী প্রভু নয়, জনগণই ক্ষমতার মালিক।”
‘বিএনপি নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য রাস্তার মাস্তানদের মতো’- মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বিএনপি নেতারা সরকারকে আক্রমণ করে চোরসহ বিভিন্ন ধরণের অশালীন কথা বলছেন। যা অযৌক্তিক ও মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।”
এ সময় মা.উ.আ.হানিফ খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে যখন চোর দুর্নীতিবাজ বলেন তখন কি নিজের কথা মনে পড়ে না ? আপনার দুর্নীতিবাজ দুই পুত্রের কথা মনে পড়ে না। আপনি এতিমদের টাকা লুট করেছেন। আপনারা দুর্নীতিবাজ ছেলেরা হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। শুধু লুট করেই শেষ নয় বিদেশে পাচারও করেছে। বিদেশ থেকে আবার সে টাকা ফেরতও এসেছে।”
খালেদা জিয়ার দুই পুত্রের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারেক-কোকোর বিরুদ্ধে মামলা তো আর আমরা দেইনি। দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। মামলায় নিজেদের স্বচ্ছ প্রমাণ করতে পারবে না বলেই তারা প্যারোলে মুক্ত হয়ে এখন বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারেক কোকো যে দুর্নীতিবাজ এটা প্রমাণ করেছে সিঙ্গাপুর। এফবিআই এসে তাদের দুর্নীতির সাক্ষ্য দিয়েছে। দেশে না হয় আপনার প্রতিপক্ষ রয়েছে। বিদেশে সিঙ্গাপুর ও এফবিআইও কি আপনার প্রতিপক্ষ।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, “উচ্চ আদালত কর্তৃক এটা অবৈধ। সংবিধান থেকে বাতিল এ বিষয়টি নিয়ে আর কোন আলোচনা হতে পারে না।’
তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে সেটা নিয়ে আমরা নির্বাচনের ৪/৫ মাস আগে বসে ঠিক করে নিতে পারবো। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রস্তাবিত অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার নিয়ে সংসদের ভেতরে বাইরে যে কোন জায়গায় আলোচনা হতে পারে।”
শ্রমিক লীগের সভাপতি শক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
নিউজরুম