যুদ্ধপরাধীদের পক্ষে তুরস্কের প্রতিনিধি দলের ব্যাপক দূতিয়ালি

0
183
Print Friendly, PDF & Email

ঢাকা (২৩ ডিসেম্বর) : বাংলাদেশ সফররত তুরস্কের একটি প্রতিনিধি দল যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ব্যাপক দূতিয়ালি করছে। সূত্র জানিয়েছে জামায়াতের আমন্ত্রণেই টুরিস্ট ভিসায় ঢাকায় এসে একের পর এক বৈঠক করে যাচ্ছে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তুরস্কের সাবেক স্টেট মিনিস্টার লুতফুইসিনজন।

সূত্র জানায় ২০ ডিসেম্বর ঢাকায় পৌঁছার পর দুই দিনই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে প্রতিনিধি দলটি। শনিবারেও তারা অন্তত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছে।

তুরস্কের প্রতিনিধি দলটির ঢাকায় আসার সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে কোনো যোগাযোগ হয়েছে কিনা তা কোনো পক্ষ থেকেই নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সূত্র জানিয়েছে এ দলটির জন্য রাজধানীর বনানিতে ইনোটেল নামক হোটেলে বুকিং দিয়েছেন আহসান নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র।

ঢাকায় পৌঁছার পরে ২১ ডিসেম্বর রাত ৮টা থেকে ১০ পর্যন্ত এই প্রতিনিধি দলটি বৈঠক করে গুলশানের একটি হোটেলে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধাপরাধের বিচারে জামায়াত নেতাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুন্সি আহসান কবীর, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমানসহ অন্তত ১৫ জন আইনজীবী।

২২ ডিসেম্বর সকালে তুর্কি প্রতিনিধি দলটি বৈঠক করে বিএনপি’র নেতাদের সঙ্গে।  সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পৌনে দুই ঘণ্টাব্যাপী বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের এ বৈঠকে বিএনপির পক্ষে অংশ নেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহ উদ্দিন আহমেদ।

এরপর দুপুর ২টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তুরস্কের প্রতিনিধি দলটি বেঠকে বসে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে তার কার্যালয়ে। এই বৈঠকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার ব্যারিস্টার আরমানসহ আরো ৭/৮জন।

তুর্কি প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে সবশেষ বৈঠকটি হয় আইন ও শালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার একজন সাক্ষী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের। রাজধানীর গুলশানের ওই একটি হোটেলে এই বৈঠকটি হয় সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

সূত্র জানায় এই সবগুলো বৈঠকেই যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টিকে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছে বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমানও। এক প্রশ্নে জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, “যুদ্ধাপারাধের বিষয় ছাড়াও বেশ কিছু রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুলের পাঠানো এক চিঠিতে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ওই চিঠিতে জামায়াত নেতাদের যাতে মৃতুদ- না দেওয়া হয় সে আহ্বানও জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

ঢাকা সফরকারী প্রতিনিধি দলটির এসব বৈঠক ও চিঠিরই ধারাবাহিকতা হতে পারে বলে মত সংশ্লিষ্টদের। তবে এই সফরের সঙ্গে তুরস্ক সরকারের কোনো সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়নি।

নিউজরুম

শেয়ার করুন