রুপসীবাংলা, ঢাকা (১৩ ডিসেম্বর): ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ছাড়া না হলে ২৬ ডিসেম্বরের পর কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতালের সমাপনী সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম এ ঘোষণা দেন।
বস্তুত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস ও আগামী ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮ দলীয় জোটের কিছু রুটিন কর্মসূচি থাকায় বিএনপি আপাতত কঠোর কর্মসূচি থেকে সরে থাকার সিদ্ধান্ত নিলো।
সংবাদ সম্মেলনে হরতাল চলাকালে সারাদেশে আটক ও আহত নেতা-কর্মীদের পরিসংখ্যান তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রেরণায় ছাত্রলীগের ক্যাডাররা বিশ্বজিৎকে হত্যা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তরিকুল।
তিনি জানান, হরতাল চলাকালে ঢাকাসহ সারাদেশে ৩শ’ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ৮৪৭ জন। বুধবার থেকে এ পর্যন্ত ১৮ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৩ হাজারেও বেশি নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে।
খালেদাকে গ্রেফতারের হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) যে অপকর্ম তা ঢাকতে চাইলে খালেদাকে গ্রেফতার করতে হবে। তা না হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবু চন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী থাকতে পারবেন না।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে হুঁশিয়ার করে “দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ”-কবির এ মনোভাব বোঝার আহবান তরিকুল।”
তিনি বলেন, “খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করবেন, আমরা নিশ্চয়ই ললিপপ চুষবো না।”
“খালেদা জিয়াকে জনগণ রক্ষা করবে” মন্তব্য করে তরিকুল বলেন, “আপনারা আগেভাগেই কারাগার সংস্কার করে রাখুন। ক্রিমিনাল ওফেন্সের জন্য আপনাদের কি শাস্তি হবে ভাবুন।
আপনাদের মতো অপরাধীদের বিচার জনগণ উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে করবে। আপনারা মিথ্যাবাদী।
সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা। ছাত্রদের ক্রিমিনালে পরিণত করার দায়ে নিজেদের পরিণতির কথা ভেবে দেখুন।”
তিনি এ সময় সফল হরতালের জন্য দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করেন।
তিনি বলেন, “এ সরকারের বিরোধী মত দমনের যে চিরাচরিত স্বভাব তার পরিবর্তন হয়নি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একদলীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চান। এজন্য তিনি দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন। তিনি রাষ্ট্রযন্ত্রকে টরচারিং মেশিনে পরিণত করে দুর্বিষহ নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি করেছেন। এজন্য বিএনপি মহাসচিবসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হামলা, মামলা, গ্রেফতার করে হিংস্রতার পরিচয় দিচ্ছেন।”
“এ সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে” মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কিন্তু এ পথ অনুসরণ করে তারা বাঁচতে পারবে না। জনতার আদালতে জনগণ তাদের অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়নের বিচার করবে।”
“যুবলীগ ছাত্রলীগকে ভাড়াটিয়া ক্যাডার বাহিনী বানিয়ে মানুষ হত্যার মূল প্রেরণাদাতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী” অভিযোগ করে তরিকুল বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশের কারণে আজ রাস্তাঘাটে হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড ঘটছে।”
শেয়ারবাজার, হলকার্ম, পদ্মাসেতু ইত্যাদি দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কলঙ্কের ভারে তাদের চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। তারা গণবিচ্ছিন হয়ে অতলে ডুবে গেছে। তাই তারা অস্ত্রবাজি করে বাঁচতে চায়। কিন্তু এভাবে তারা বাঁচতে পারবে না।”
সংবাদ সম্মেলনে আরো ছিলেন- বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম-মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, রুহুল কবীর রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান সারোয়ার প্রমুখ।
নিউজরুম