রুপসীবাংলা, ঢাকা (০৯ ডিসেম্বর) : সারা দেশে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের রাজপথ অবরোধ চলাকালীন পিটুনি, বাসচাপা ও ধাওয়া খেয়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন জামায়াতকর্মী বলে জানা গেছে। রোববার সকাল ৯টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় বাসচাপায়, সূত্রাপুর থানাধীন বাহাদুরশাহ পার্কের সামনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় পিটুনিতে এবং পুলিশ ও সরকার দলীয় আওয়ামী লীগ নেতাকমীদের ধাওয়ায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে এ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় সকাল সাড়ে ৯টায় একটি দ্রুতগামী বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক পিকেটার নিহত হয়। তবে নিহতের নাম পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) নিশারুল আরিফ বাংলানিউজকে জানান, পিকেটিং করার সময় একটি দ্রুতগামী বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে তিনি মারা যান।
এদিকে, রাজধানীর বাহদুরশাহ পার্ক এলাকায় অবরোধ সমর্থক ও ছাত্রলীগকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে বিশ্বজিৎ দাস নামের একজন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
রোববার বেলা সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় বাহাদুরশাহ পার্কের সামনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
সকালে ওই এলাকায় ছাত্রলীগের একটি মিছিলে হামলা চালায় ছাত্রদলসহ ১৮ দলীয় জোটের লোকজন। পরে ছাত্রলীগ তাদের ধাওয়া দেয়। এতে টেইলর ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস দুই গ্রুপের মাঝখানে পড়ে যান। বিশ্বজিতের ঘনিষ্ঠজনেরা তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
তবে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, বিশ্বজিৎ দাস ছাত্রলীগের সঙ্গে অবরোধবিরোধী মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। ছাত্রদলের কর্মীরা তাকে কুপিয়ে জখম করে। পরে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়। বিশ্বজিতের লাশ মিটফোর্ট মর্গে রাখা হয়েছে।
১২৩ শাঁখারিবাজারে বিশ্বজিতের একটি টেইলার্স দোকান ছিল। তিনি থাকতেন ৫৩ ঋষিকেশ দাস লেনে। তার বড় ভাই উত্তম দাস, বাবা অনন্ত দাস।
এছাড়া সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকমীদের ধাওয়ায় এক জামায়াতকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
তবে পুলিশের ভাষ্য, জামায়াতের নেতা-কর্মীরা মিছিল করতে গেলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। জামায়াতের বয়স্ক ওই কর্মী মাটিতে পড়ে গিয়ে আহত হন। পরে তার মৃত্যু হয়।
জামায়াতকর্মীর নাম ওয়ারেছ আলী (৫৫)। বাড়ি এনায়েতপুর থানার জালালপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে।
জামায়াতের দাবি, পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দল ইচ্ছে করে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের কর্মীকে হত্যা করেছে। বেলকুচি জামায়াতের আমির রফিকুল ইসলাম সোহেল বলেন, যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও পুলিশ ধাওয়া করে ওয়ারেশ আলীকে হত্যা করেছে।
তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান সিরাজ এ ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃত্ততা নেই বলে দাবি করেন।
তবে এনায়েতপুর থানার ওসি মো: ওয়াহেদুজ্জামান পুলিশের ধাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে ধাওয়ায় জামায়াতকর্মী পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। পরে শুনেছি মারা যাওয়ার কথা। তবে লাশ দেখিনি।
নিউজরুম