নৈতিক কারণেই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত: ফখরুল

0
164
Print Friendly, PDF & Email

রুপসীবাংলা, ঢাকা (০৫ ডিসেম্বর) : পদ্মাসেতুতে দুর্নীতি হওয়ার কথা স্বীকার করায় এখন নৈতিক কারণেই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে ৯০’র সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

দুদক সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘পদ্মাসেতুতে দুর্নীতি হয়েছে সরকার ও দুদক এতোদিন কেউই স্বীকার করেনি। সাবেক যোগযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন ও মশিউর রহমানরা প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন বলেই তাদের রক্ষা করতে দুদক সার্টিফিকেট দিয়েছিল।’’

প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনরা পদ্মাসেতুর দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরায় চাপের মুখে সরকার ও দুদক শেষ পর্যন্ত দুর্নীতির কথা স্বীকার করেছে। এখন তারা আবুলকেও আসামি করছে। এখন যেহেতু সরকার ও দুদক দুর্নীতির কথা স্বীকার করেছে, সেহেতু এই নৈতিকতার কারণে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।’’

হলমার্ক ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, ডেসটিনি, পদ্মাসেতুসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের বিরুদ্ধে লুটপাট ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘সরকারের লোকজন শুধুমাত্র অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমেই মাসে ৯০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছেন।’’

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়। তবে সে বিচার হতে হবে ন্যায়বিচার। বিচারের নামে প্রহসন কিংবা রাজনৈতিক দলকে নির্মূল করার বিচার চায় না বিএনপি।’’

এ সময় বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের চেষ্টা করছে- সরকারের এমন অভিযোগের তীব্র সমালোচনা করেন।

৯ ডিসেম্বরের অবরোধ কর্মসূচি সর্ম্পকে ফখরুল বলেন, ‘‘৯ ডিসেম্বর সারা দেশে রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি রয়েছে। সরকার যদি কোনো উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ১৮ দলীয় জোটের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তবে তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।’’

গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় চিরস্থায়ী হতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘জনগণ আওয়ামী লীগের এ স্বপ্ন কখনোই পূরণ হতে দেবে না। স্বৈরাচারী ও খুনি সরকার কখনো টিকে থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগও পারবে না। এদেশ থেকে তাদের বিদায় নিতে হবে।’’

এ সময় তিনি এ সরকারকে উৎখাতে  জনগণকে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার কথা বলে বক্তব্য প্রদান করায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর তীব্র সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ইনু সাহেব এখন সবকিছু ভুলে গেছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই আওয়ামী লীগের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে তারা তরুণদের নিয়ে সংগ্রাম করেছেন। আওয়ামী লীগের অত্যাচারে তখন অনেক তরুণকে জীবন দিতে হয়েছে। তাদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল। ইনু সাহেব তাদের আত্মার সঙ্গে বেইমানি করে গণতন্ত্রের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করছেন।’’

ইনুকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, ‘‘ইনু সাহেবের মনে রাখা উচিত, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের একজন গণতন্ত্রমনা দেশনেত্রী। তিনি স্বৈরাচারী এরশাদের পতনসহ সকল আন্দোলনে আপোষহীন নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সর্ম্পকে ইনু সাহেবরা যখন এ ধরনের কথা বলেন, তখন জাতি তা ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারে না।’’

হাসানুল হক ইনু এ বক্তব্য ‘অশ্রাব্য ও শিষ্টাচার বর্হিভুত’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংগঠনটির আহ্বায়ক ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ৯০’র আন্দোলনের ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, নাজিম উদ্দিন আলম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, খন্দকার লুৎফর রহমান, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।

নিউজরুম

শেয়ার করুন