রুপসীবাংলা, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মঙ্গলবার ফিলিপাইনের মিন্দানাও দ্বীপে আঘাত হানা টাইফুন বোফার আঘাত বুধবারেও অব্যাহত রয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, এর আঘাতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দেড় শতাধিকে দাঁড়িয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ২০০ জনেরও বেশি মানুষ।
ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ মিন্দানাওয়ের অবস্থান গ্রীষ্মকালীন টাইফুন প্রবণ অঞ্চলের বাইরে হওয়ায় বোফাকে ঘিরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এর আগে ২০১১ সালের ডিসেম্বরে একই অঞ্চলে আঘাত হানা ঝড় ওয়াশির চেয়ে বোফার বাতাসের গতি অন্তত আড়াইগুণ বেশি। সেসময় ১২০০ লোকের প্রাণহানি হয়েছিলো।
কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন বোফার সর্বোচ্চ গতি ছিলো ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার। টাইফুনটি প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের ওপর আঘাত হানে, যার ফলে ঐসব এলাকার কয়েক লাখ মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
ঝড়ের আক্রমণে মিন্দানাও দ্বীপের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছে ফিলিপাইন রেডক্রস। দ্বীপের প্রচুর গাছপালা উপড়ে গেছে, ধ্বংস হয়েছে অনেক বাড়িঘর। বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন রয়েছে।
মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিলো। বুধবার উদ্ধার কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধারণা করা হচ্ছে, এ সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সরকারের মুখপাত্র ফে মাস্ত্রে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ রাজ্য কম্পোস্টেলা ভ্যালিতেই অন্তত ১৫১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৬৬ জন গ্রামবাসী ও সেনা সদস্যরা রয়েছেন। মঙ্গলবার ঐ এলাকার দুইটি নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র ও একটি সেনাবাহিনীর ক্যাম্প বন্যা কবলিত হলে তারা নিহত হন।
কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, ঝড়ে এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি। ৮৫ হাজারেরও মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
এছাড়া মিন্দানাওয়ের পূর্বাঞ্চলে ভূমিধ্বসে একটি জাতীয় মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আটকা পড়েছে বিপুল সংখ্যক যানবাহন।
বুধবার সকালে টাইফুনটির কেন্দ্র ধীরে ধীরে পশ্চিমের পালাওয়ান দ্বীপের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এসময় ঐ অঞ্চল জুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয় ও বন্যার উৎপত্তি হয়।
মঙ্গলবার থেকে এ পর্যন্ত দেশটির সরকারের উদ্যোগে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঝড় কবলিত এলাকার জন্য কয়েক লাখ ডলার মূল্যের ত্রাণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ বাহিনী ও সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে।
এছাড়া বিমানের সব ফ্লাইট ও ফেরি চলাচল বাতিল করায় ঐ অঞ্চলে আটকা পড়েছেন প্রায় ৫ হাজার পর্যটক।
আপলোড, ০৫.১২.১২