রুপসীবাংলা অর্থনীতি ডেস্ক: প্রক্রিয়া শুরুর প্রথমেই হোঁচট খেয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আগ্রহপত্র (এলওআই) পাওয়া সাতটি ব্যাংক।
ব্যাংকিং শুরুর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে করা তাদের চূড়ান্ত আবেদনপত্রে নানা ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তথ্যের অমিল সহ নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ছে ব্যাংকগুলোর আবেদনপত্রে।
এসব ত্রুটি সংশোধন করে নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ৫ ব্যাংকের উদ্যোক্তাকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আরও দুটি ব্যাংক ফারমার্স ব্যাংক ও এনআরবি ব্যাংককে দুয়েকদিনের মধ্যেই চিঠি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানায়।
সূত্র জানায়, নতুন নয়টি ব্যাংকের মধ্যে সাতটি ব্যাংক কাজ শুরুর আবেদন করলেও এগুলোর উদ্যোক্তারা যে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন, তাতে অনেক ত্রুটি পাওয়া গেছে। এছাড়া অবশ্য পালনীয় কিছু শর্তও পালন করতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
জানা যায়, গত ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সভায় অনানুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টির ওপর আলোচনা করা হয়। এতে আবেদন করা সাত ব্যাংকের বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। সেখানে আবেদনের তথ্যের অসঙ্গতির বিষয়টি তুলে ধরা হলে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের তা সংশোধন করার সুযোগ দিতে চিঠি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরও জানা যায়, মেঘনা ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ও এনআরবি ব্যাংক চূড়ান্ত লাইসেন্স পেতে আবেদন করেছে। এর মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক ও এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড ছাড়া সবাইকেই চলতি সপ্তাহে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাকি দুই ব্যাংককেও শিগগিরই চিঠি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে।
জানা গেছে সাতটি ব্যাংকেরই বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আয়কর বিবরণীর সঙ্গে মূলধন সরবাহের অসঙ্গতি যাচাই করতে আবেদনগুলো এনবিআরে পাঠানে হলে সেখানেও কিছু গরমিল পাওয়া যায়।
এছাড়া ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর জন্য আবেদন জমা দেওয়া সাতটি ব্যাংকের সবগুলোর প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা দেখানো হয়েছে রাজধানীতে। প্রতিটি ব্যাংক ২০ জন করে পরিচালকের নাম জমা দিয়েছে। তবে প্রত্যেক পরিচালকের দেওয়া তথ্যে অমিল রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “নতুন ব্যাংকের অনুমোদনের বিষয়টি রাজনৈতিক। তাই আমরা বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। আবেদনকারীদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্যগুলো সংশোধন করে দিতে।”
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক চাপে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে নয়টি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। এর মধ্যে তিনটি ব্যাংক রয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মালিকানায়। তবে অন্য সব ব্যাংকেরই উদ্যোক্তাদের তালিকায় রয়েছেন বর্তমান সরকারের নেতারা।
এদিকে চূড়ান্ত আবেদেনর জন্য সময় চেয়েছে সাংসদ ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের মধুমতি ব্যাংক ও প্রবাসীদের অর্থায়নে অনুমতি পাওয়া নিজাম চৌধুরীর এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক।
নিউজরুম