রুপসীবাংলা, ঢাকা (০৩ ডিসেম্বর) : ছাত্রলীগকে আচরণে আরো সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল-আলম হানিফ।
সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ঢাকা জেলা শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, জামায়াত-শিবির, বিএনপির ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আগামী দিনে ছাত্রলীগকে জনগণের আরো কাছে পৌঁছাতে হবে। তাই ছাত্রলীগকে তাদের আচরণে আরো সংযত হতে হবে।
এ সময় হানিফ ছাত্রলীগের সমালোচনা করে বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে কেউ মারা গেলে কান্না করার জন্য ভাড়ায় লোক নিয়ে আসা হয়। অর্থের পরিমাণ বেশি হলে কান্নার আওয়াজ জোরে হয়। আজকের অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীরা যেভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে স্লোগান দিচ্ছে তাতে আমার এই গল্পের কথা মনে পড়ে যায়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য রয়েছে। ছাত্রলীগকে সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। ছাত্রলীগ দেশের মানুষের জন্য রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে নিজেদের ঐতিহ্যের প্রমাণ দেবে।
বরিশালে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে মাহবুব-উল-হানিফ বলেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নিয়ে খালেদা জিয়ার আতঙ্ক রয়ে গেছে। কারণ ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত খালেদা সরকারের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ আন্দোলন করে খালেদা জিয়ার ক্ষমতায় ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ জামায়াত-শিবিরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের চেষ্টা ও খালেদা জিয়ার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, বাংলার মানুষকে দেবার আর কিছু নেই বরিশালের জনসভায় খালেদা জিয়া এ কথা বললেই দেশের মানুষ অধিক খুশি হত। কারণ বাংলার মানুষকে ভাল কিছু দেওয়ার যোগ্যতা খালেদা জিয়ার নেই।
তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়া তার প্রভুদের ইচ্ছা অনুযায়ী দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে চায়। ৭১এর পরাজিত পাকিস্তানিরা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানিয়ে তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায়। খালেদা জিয়া ২০০১ সালের মতো দেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র বানাতে চান। তিনি এখনো সেই জামায়াত জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়ে চলেন।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুল মান্নান খান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমাদের নির্বাচনী ম্যান্ডেট ছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জামায়াত-শিবিরকে বিএনপি চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু কোন হামলা, ষড়যন্ত্র দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, ছাত্রশিবির মুখোশ পাল্টিয়েছে। কিন্তু তাদের চরিত্র বদলায়নি। যার প্রমাণ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার চত্তর আবারো ছাত্রলীগ নেতার রক্তে রঞ্জিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ছাত্র শিবিরকে প্রতিরোধের দায়িত্ব ছাত্রলীগের। সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে তাদের প্রতিহত করতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বলেন, প্রকৃত ছাত্রদের হাতে ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে তুলে দেওয়া হবে। কোন অছাত্র, ঝুটব্যবসায়ী, চাঁদাবাজিতে জড়িত কিংবা বিবাহিত কারো হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হবে না। দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল।
ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এমএএইচ আবিদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
নিউজরুম