হজ এজন্সিগুলোর অব্যবস্থাপনায় এবারের হজের আনুষ্ঠানিকতা অনেক আগে শেষ হয়ে যাবার পরও দেশে ফিরতে পারছেন না বাংলাদেশি হাজিদের অনেকে। এ অবস্থায় কবে তারা ফিরতে পারবেন তা জানার জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সির লোকদের খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছে না।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, অনেকের আবার ফিরতি ফ্লাইট ঘনিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত মদীনা জিয়ারত করতে পারেননি। মদীনা জিয়ারাত ছাড়াই দেশে ফেরার মত পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ হজ মিশনের কম্যাণ্ডেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ হজ মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে হজ মিশনের প্রসাশনিক দলনেতা বজলুল হক বিশ্বাস এসব অভিযোগ স্বীকার করে বাংলানিউজকে জানান, কিছু কিছু এজেন্সির অতি মুনাফার লোভ, অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে যথা সময়ে দেশে ফিরতে পারছেন না হাজি সাহেবরা। অনেকে নিয়মিত (সাধারণ যাত্রীদের) ফ্লাইটে হাজি পাঠাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ বিমান ছাড়াও গালফ এয়ার, এমিরেটস, ইত্তেহাদ এবং ওমান এয়ারে হাজিদের দেশে পাঠাচ্ছে অনেক এজেন্সি।
বজলুল হক জানান, অভিযুক্ত এজেন্সিগুলোর বিরুব্ধে ব্যবস্থা নেবে ধর্ম মন্ত্রনালয়। এবছর হজে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে— এমন এজেন্সির একটি তালিকা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতি বছর কিছু কিছু হজ এজেন্সি অত্যন্ত কৌশলে হজের নামে আদম ব্যবসা করে থাকে। নিয়ম বহিঃর্ভূতভাবে ওয়ানওয়ে টিকেট কেটে হজে এসেছেন অনেকে। তাদের অনেকের পরিকল্পনা ছিলো স্থায়ীভাবে এখানে থেকে যাওয়া কিন্তু এখন উপাযুন্ত পরিবেশ না দেখে দেশে ফেরার জন্য হজ মিশন এবং হাবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন তারা।
এসব ব্যক্তিদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এবং এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলেও তিনি জানান।
মক্কা হজ মিশনে কর্মরত সোহাইব বলেন, প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে। আমরা সেগুলো খতিয়ে দেখে সমাধান দেয়ার চেষ্ঠা করছি। ভুক্তভোগি হাজিদেরকে সরাসরি হজ মিশনে যোগাযোগ করারও পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে, এবছর হজে এসে এপর্যন্ত মারা যাওয়া বাংলাদেশি হাজির সংখ্যা ১৭০ জন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে মক্কায় মারা যান ১১৮ জন, মদিনায় ২৮ জন, জেদ্দায় ৬ জন ও মিনায় ১৮ জন (পুরুষ ১জন শিশুসহ ১৫০ জন, মহিলা ২০ জন)। গত বছর এ সংখ্যা ছিলো ১০২জন। এবারের ১৭০ জনের মধ্যে সরকারি আছেন ৬ জন আর বেসরকারি ১৬৪ জন।
গত সোমবার পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছেন ৯১,৩৪৯ হাজী। হজ পরবর্তী মদিনায় অবস্থান করছেন ৫,৯০৫ জন হাজি। দেশে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় মক্কায় অবস্থান করছেন ১২,২৩৬ জন।
উল্লেখ্য, হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট ১নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এবং তা আগামী ৩০ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু বিরাজমান পরিস্থিতিতে ওই সময়ের মধ্যে সবাইকে দেশে পাঠানো সম্ভব হবে কি না— তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অভিজ্ঞ মহল।