রুপসীবাংলা, ঢাকা (২৬ নভেম্বর) :নিছক শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যই নয়-দু’দেশের সাধারণমানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতি লক্ষ্য রেখে ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ানচেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি -ফিকি আগামী ৩ তারিখ থেকে ৫ডিসেম্বর ঢাকায় ভারতীয় পণ্য ও সেবা প্রদর্শনী- ‘ইন্ডিয়া শো’ আয়োজন করেছেবলে ইন্দো-বাংলা ব্যবসায়ীরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এ প্রদর্শনী উপলক্ষ্যেসোমবার ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁও-এ প্রেস ব্রিফিং-এর আয়োজন করা হয়।
প্রেসব্রিফিং-এ বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার সন্দীপ চক্রবর্তীবলেন, বাংলাদেশ যাতে ভারতে তাদের বেশি বেশি পণ্য রপ্তানি করতে পারে সেটাইভারত সরকারের লক্ষ্য। এজন্য কেবলমাত্র মদ ও সিগারেট বাদে ৪৬টি পণ্য ভারতেশুল্কমুক্ত রপ্তানির সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আর এতে করে বাংলাদেশ ইদানিংপ্রচুর পণ্য রপ্তানি করছে ভারতে।
তবে ভারতের বাজার পেতে হলেসেখানকার মানুষের কি কি পণ্য চাহিদা রয়েছে তা লক্ষ্য রেখেই বাংলাদেশে পণ্যউৎপাদন করতে হবে। বিশেষ করে ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়সহ নর্থ-ইস্টরাজ্যগুলোতে বাংলাদেশ যে নানা পণ্য রপ্তানি হয় তা লক্ষ্য রাখতে হবে।
ভারতেরএসব রাজ্যে পণ্য রপ্তানিতে ভারতের অন্যান্যস্থানের চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাপকভৌগলিক সুবিধাজনক দিক থেকে এগিয়ে আছে। তাই বাংলাদেশের সামনে রয়েছে অপারসম্ভাবনা।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে সন্দীপ চক্রবর্তীবলেন, আপনারা শুধু কাপড়-চোপড় নয় এমন সব পণ্যের দিকে লক্ষ্য রেখে উৎপাদনকরুন যাতে এসব রাজ্যে সহজে রপ্তানি করতে পারেন। অবশ্য এসব বিষয় নিয়েইতিমধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে বলে তিনি উল্লেখকরেন।
তিনি বলেন বাংলাদেশের সিমেন্ট, সিরামিক, গামেন্টস খাত বেশশক্তিশালী। যোগাযোগের অসুবিধার কারণে এ ৭টি রাজ্যে অন্যান্যস্থান থেকে পণ্যপরিবহন বেশি ব্যয় ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সেকারনে বাংলাদেশ বেশ সুবিধাজনকঅবস্থানে রয়েছে। তাই আমি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের এ সুযোগ গ্রহণের আহ্বানজানাই।
তিনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের এসব রাজ্যে তাদের বিনিয়োগেরআহ্বানও জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ত্রিপুরায় প্রচুর ফল উৎপাদন হয়।সেখানে ফল প্রক্রিয়া ক্ষেত্রের ব্যাপারে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগকরতে পারেন।
আগামী ৩ ডিসেম্বর সকালে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিকসম্মেলন কেন্দ্রে ৩দিন ব্যাপী ইন্ডিয়ান শো’র উদ্বোধন করবেন ভারতের বাণিজ্য, শিল্প ও টেক্সটাইলমন্ত্রী আনন্দ শর্মা এবং বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদের। এ প্রদর্শনী উপলক্ষে ভারতের সরকারি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরকরবে। বাণিজ্যদলের প্রতিনিধিত্ব করবে প্রায় ৫০টি শীর্ষ স্থানীয় ভারতীয়কোম্পানি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফিকি ইস্টার্ন কাউন্সিলেরচেয়ারম্যান গৌরব স্বরূপ, ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ডইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট আবদুল মতলুব আহমেদ, ভারত সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অরবিন্দ মেহতা, বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শওকত আলী ইয়ারেসি প্রমুখ।
গৌরব স্বরূপবলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নয়নের লক্ষ্যেই অংশীদারিত্ব থিমটির মাঝেই ইন্ডিয়াশো’র মূল উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকেবাংলাদেশের সামনে তাদের সর্বশেষ সাফল্য ও প্রাপ্তি তুলে ধরার জন্য আমন্ত্রণজানানো হয়েছে এবং একই সাথে ভারতের জন্য বাংলাদেশ কি অফার করতে পারে তাখুঁজে দেখার প্রয়াস চালানো হবে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে এ প্রদর্শনীতে ১০০টির বেশি স্টল ও প্যাভিলিয়নে ভারতের ৬০টির অধিকশীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবা উপস্থাপন করবে। যে সকল খাতপ্রদর্শনীতে প্রতিনিধিত্ব করছে এর মধ্যে টেক্সটাইল, হস্তশিল্প, অটোমোবাইল ওস্পেয়ার-পার্টস, তৈরি পোশাক, ভোগ্যপণ্য, অলঙ্কার, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, তথ্য প্রযুক্তি, কৃষিবাণিজ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, নবায়নযোগ্যজ্বালানি, হালকা যন্ত্রশিল্পসহ নানাবিধ খাত রয়েছে।
পাশাপাশিদ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্র ও উপায় খুঁজে বের করারলক্ষ্য নিয়ে প্রদর্শনী চলাকালীন বিনিয়োগের সুযোগ বিষয়ক সেমিনার ও বি২বিবৈঠকের আয়োজন করা হবে। প্রদর্শনী চলাকালীন একাধিক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ওবিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনাও রয়েছে।
ইন্ডিয়া শো প্রতিদিনসকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)এবং ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আইবিসিসিআই)প্রদর্শনী আয়োজনে সহায়তা করছে।
এ সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন-ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (তথ্য) সুজিত ঘোষ, হাইকমিশনেরবাণিজ্য সংক্রান্ত ফার্স্ট সেক্রেটারি বি শ্যাম প্রমুখ।
মতলুবআহমেদ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য আরো বৃদ্ধিকল্পে বাংলাদেশেরব্যবসায়ীদের ভারত সফরের ক্ষেত্রে বিমান টিকিটের বিশেষ মূল্য হ্রাসেরব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
নিউজরুম