রুপসীবাংলা, ঢাকা ২৬ নভেম্বর) :আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে আগুনে পুড়ে যাওয়া তাজরিনফ্যাশনে কাজের পরিবেশ ভালো ছিলো বলে দাবি করেছেন এর মালিক দেলোয়ার হোসেন।এই অগ্নিকাণ্ডে তাদের বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে বলেও দাবি তার।
এদিকে, তাজরিন ফ্যাশনের অন্যতম ক্রেতা প্রতিষ্ঠান হংকংভিত্তিক লিং অ্যান্ড ফাং এইঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে, তারা নিজেদের উদ্যোগে আগুনের ঘটনারকারণ তদন্ত করে দেখবে। আগুনে নিহত প্রতিটি শ্রমিকের পরিবারকে ১ লাখ টাকা (১২০০ ডলার)
করে দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে লি-ফাং।
তবে বাংলানিউজেরঅনুসন্ধানে দেখা গেছে, নিরাপত্তার দিক থেকে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ (অরেঞ্জ)’ রেটিংয়ে ছিলো তাজরিন ফ্যাশন। গত ১৬ মে ২০১১ তারিখে একটি আন্তর্জাতিকমূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান এ রেটিং করে। তাজরিনের মাদার অর্গানাইজেশন তুবাগ্রুপের ওয়েবসাইটেই দেখা যায় এই তথ্য। এই মূল্যায়নটি (অ্যাসেসমেন্ট) করায়এক সময়ে তাজরিনের অন্যতম ক্রেতা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যবসায়ীপ্রতিষ্ঠান ওয়াল মার্ট। পরে ২০১১ এর আগস্ট নাগাদ পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতিহলে কারখানাটিকে ‘মধ্য ঝুঁকির (ইয়ালো)’ বলে চিহ্নিত করা হয়। ওয়ালমার্টেরমুখপাত্রের বরাত দিয়ে, এক বছর পরে আবারও পরিদর্শন চালানো হবে এমন একটি তথ্যতুবা গ্রুপের ওয়েব সাইটে থাকলেও তা চালানো হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করাযায়নি। কোনো একটি প্রতিষ্ঠান দুই বছর সময়কালে তিনবার ‘অরেঞ্জ’ রেটিং হলেতাকে কোনো কাজ দেয় না ওয়ালমার্ট।
এনিয়ে তাজরিন ফ্যাশনের মালিকদেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইল ফোনে কলকরে বার বার রিং টোন শোনা গেলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
তবে একটিআন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে দেলোয়ার হোসেন লি-ফাংয়ের সঙ্গে কাজ করার বিষয়টিনিশ্চিত করেন। সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি বলেন, “কারখানার জন্য এই অগ্নিকাণ্ডএকটি বড় ক্ষতি। আমার সাতটি ফ্যাক্টরি রয়েছে। সেগুলোর কোনোটিতে আগুন লাগারঘটনা এটিই প্রথম।” কারখানাটিতে কাজের পরিবেশ অনিরাপদ ছিলো এমন অভিযোগসরাসরি অস্বীকার করেন দেলোয়ার হোসেন।
এদিকে, হংকংভিত্তিক কোম্পান লিঅ্যান্ড ফাং তাজরিন ফ্যাশনে আগুনে নিহত ১১২ শ্রমিকের প্রতিটি পরিবারকে ১লাখ টাকা (১২০০ ডলার) করে অর্থসহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাজরিনেরশ্রমিকদের হাতে তৈরি পোশাকের একটি বড় ক্রেতা এই লি-ফাং।
শনিবার রাতের বিভিষীকাময় সেই অগ্নি দুর্ঘটনায় শ্রমিক হতাহতের ঘটনার পর রোববার লি-ফাং এক বিবৃতিতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে।
প্রতিষ্ঠানটিরনারী মুখপাত্র একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শ্রমিকদের এত হতাহতেরঘটনায় আমরা দুঃখিত ও মর্মাহত। আমরা নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীরসমবেদনা জানাচ্ছি।
এর আগে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকপরিবারকে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা করে অর্থসহায়তা দেওয়ার ঘোষণাদেওয়া হয়। লি-ফাংয়ের এই অর্থসহায়তা বিজিএমইএ’র সহায়তার সঙ্গে যোগ হবে।
ওইমুখপাত্র তার একটি ই-মেইল বার্তায় তাজরিন ফ্যাশন থেকে পোশাক বানিয়েআন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এইফ্যাক্টরির সঙ্গে আমাদের চুক্তি রয়েছে এবং কিভাবে এই অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটলোতা আমরা তদন্ত করে দেখবো।
এছাড়াও তাজরিন ফ্যাশন ইউরোপিয়ান চেইন সিঅ্যান্ড এ সহ আরো কয়েকটি নামকরা প্রতিষ্ঠানের কাপড় তৈরি করে। আর লি অ্যান্ডফাং-এর মাধ্যমে বিশ্বসেরা খুচরা বিক্রেতা ওয়াল-মার্ট স্টোরস, এবারক্রোম্বিঅ্যান্ড ফিচ কোম্পানি এবং কোল গ্রুপ’র কাছে পৌঁছে তাজরিনের শ্রমিকদেরতৈরি করা পোশাক।
নিউজরুম