নিজস্ব প্রতিবেদক, সিংড়া, (২৬ নভেম্বর): নাটোরের সিংড়া উপজেলার নিশ্চিন্তপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মামুনুর রশীদের বিরদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে জিম্মি করে ৫ লাখ টাকা দাবী, শিক্ষকদের সাথে অসৈজন্যমূলক আচরণ, নিয়োগের নামে অগ্রিম টাকা আত্মসাতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে শত শত এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত আবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আবেদনে গ্রন্থাগারিক পদের সার্কুলার পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পূর্বেই আরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা নেওয়ার ও অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে,বিদ্যালয়ে লাইব্রেরী না থাকলে ও গ্রন্থাগারিক পদে লোক নেওয়ার প্রক্রি্য়া শুরু করা হয়। এদিকে অবিভাবকরা জানান, বিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান কমেছে । প্রধান শিক্ষক সময়মত অফিসে না যাওয়ায় অন্য শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে ঠিকমত উপস্থিত হননা এবং ক্লাসও ঠিকমত নেন না।
এতে করে স্থানীয় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। সম্প্রতি রেহেনা বেগম নামে একজন শিক্ষক বিনা নোটিশে ১৫ দিন ক্লাসে অনুপস্থিত থাকলে প্রধান শিক্ষক তাকে জবাবদিহি করলে, প্রধান শিক্ষককে সে অকট্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বর্তমান সভাপতি এসব বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, ১৯৯২ সালে উপজেলার নিশ্চিমত্মপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্তি লাভ করে। পূর্বেও সভাপতি ফজলুল হক থাকাকালে এসএসসি তে শতভাগ পাশ করার গৌরব লাভ করে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা ১৩জন।
এলাকাবাসী জানায়, এবছর সভাপতি হিসেবে্মামুনুর রশীদ ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব নেন। তিনি ভোটারদের প্রভাবিত করে এবং ৫ লাখ টাকা অর্থ ব্যয় করে সভাপতি হন। সম্প্রতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ভুল বশতঃ পূর্বের সভাপতির নাম প্রকাশ হওয়ায় তিনি প্রধান শিক্ষকের কারসাজি মনে করে তাকে তার লোকজন সহ অফিস কক্ষে জিম্মি করে এবং ৫ লাখ টাকা দাবী করে নতুবা ওই পদে ইস্তফা দেওয়ার জন্য চাপ সৃস্টি করে। পরে এলাকাবাসীর মধ্যস্থতায় তা থেমে যায়। বর্তমান সভাপতির সাথে প্রধান শিক্ষকের সমন্বয়হীনতার কারনে পড়ালেখার মান ও কমেছে ।
অভিযোগ রয়েছে, সভাপতি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আব্দুস সোবহানের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। তবে ওই পদে এখন ও কোন নিয়োগ করা হয়নি। সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আব্দুস সোবহান ৭০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার যোগ্যতা থাকা সত্বে ও আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি ।এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়মের কথা আমি ও শুনছি, বর্তমানে শিক্ষার পরিবেশ ব্যহত হচ্ছে ।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মামুনুর রশীদ টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, গ্রন্থাগারিক পদের জন্য কোন টাকা নেওয়া হয়নি, সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ও নিয়োগের জন্য কোন টাকা নেওয়া হয়নি তার পরেও আমি তার জন্য চেষ্টা করেছি কিন্তু দুইটিতে দ্বিতীয় বিভাগ থাকায় তাকে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি ।
সম্পাদনা আলীরাজ/ রাফি, নিউজরুম