আশরাফুল ইসলাম, বড়াইগ্রাম (২৪ নভেম্বর): বড়াইগ্রাম উপজেলার বাগডোব গ্রামের ভূমিহীন ভ্যান চালক আয়েজ উদ্দিনের স্ত্রী ফিরোজা। স্বামীর আয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খেতেন তিনি। অবশেষে আশা থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সবজি চাষ শুরম্ন করেন।
প্রথম বছরেই আশাতিত ফলনে সংসারে আসে সফলতা।
ফিরোজা জানান, প্রায় ৪ বছর আগে আশা থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আদগ্রামে ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সবজি চাষ শুরু করেন। প্রথম বছর লাউ, কুমড়া, লাল শাক, বরবটি ও মরিচ চাষ করে নিজেই পরিচর্যা করেন। ভাল ফলন হওয়ায় ঋণ শোধ করেও ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়।
পরের বছর ওখানেই আরও ২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে চাষ শুরম্ন করেন। এবার স্বামীও ভ্যান ছেড়ে আমাকে সহযোগীতা করতে লাগলেন। এখন দু’জনে মিলে সবজির জমিতে পরিচর্যা করি। প্রতিদিন বিকেলে বাজারে নিয়ে টাটকা সবজি বিক্রি করে নগদ টাকা ঘরে আনেন স্বামী। সড়কের পাশে জমি হওয়ায় ওনেক পথচারী জমি থেকেই টাটকা সবজি কিনে নিয়ে যান। খুব ভাল লাগে যখন কোন ক্রেতা টাটকা সবজি কিনতে পেরে খুশি হন। নিজের পরিশ্রমকে তখন স্বার্থক মনে হয়। তিনি জানান, লাল শাক, বরবটি, লাউ,কুমড়া, শিম, বেগুন, মরিচ, কুরিকচু চাষ বেশী করেন। প্রাকৃতিক উপায়ে বেশীর ভাগ কিট পতঙ্গ দমন করে থাকি। ফলে আমার উৎপাদিত সবজি অধিক স্বাস্ধ্য সম্মত। ফিরোজার স্বামী আয়েজ উদ্দিন জানান, দুই মেয়ে এক ছেলে নিয়ে মাথা গোজার ঠাই ছিলনা । আমার মাথায় কখনোই সবজি চাষের বিষয়টি আসে নাই।
ফিরোজার উদ্যোগে চাষ শুরম্ন। অল্পদিনেই আমরা সবজি চাষে সফলতা পেয়েছি। দুই বছরের মাথায় ৫ শতক জমি কিনে নিজের জমিতে টিনের ঘর দিয়েছি। এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এবার আরও ৪ বিঘা জমি নতুন করে লিজ নিয়েছি। অনিয়মিত শ্রমিকের পাশাপাশি ৩ জন নিয়মিত শ্রমিক নিয়েছি। গতবছর সব খরচ বাদে তিন লাখ টাকারও বেশী আয় হয়েছিল। আশা করি এবার আরও বেশী লাভ হবে। তিনি আরও জানান, কৃষি বিভাগ থেকে আমাকে কোন সহযোগীতা করা হয় না।
সহযোগীতা পেলে আরও ভাল ফলন হবে বলে আমার বিশ্বাস।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খয়ের উদ্দিন মোলস্না জলেন, শুনেছি ফিরোজা ভাল সবজি চাষ করছেন। আমার পরিদর্শনে যাওয়া হয়নি। আল্পদিনেই পরিদর্শনে যাব। এছাড়া কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরণর সহায়তা দেয়া হবে।
সম্পাদনা, আলীরাজ / রাফি, নিউজরুম