রুপসীবাংলা,ঢাকা (২১ নভেম্বর) :আজমল কাসাবের ফাঁসি দেওয়ার মাধ্যমে স্বামী হত্যার উপযুক্ত বিচার পেয়েছেন বলে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন স্মীতা সালাস্কার।
সন্ত্রাসীকাসাবদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে নিহত হন কম্যান্ডো বাহিনীর বিজয় সালাস্কার।তার স্ত্রী স্মীতা সালাস্কার কাসাবের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেওয়ারজন্যও রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে বুধবার ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
স্মীতা সালাস্কার তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আজ আমি দারুণ খুশি যে, আমার স্বামীর হত্যাকারী উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে।
এদিকেআজমল কাসাবের মামলার মাধ্যমে পাকিস্তানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে বলেআশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমন খুরশিদ।
মুম্বাইহামলা মামলার সরকারি কৌসুলী উজ্জল নিকম বলেছেন, ‘পাকিস্তানি জঙ্গি আজমলকাসাবের ফাঁসি দেওয়ার মাধ্যমে ২৬/১১ শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোহলো। এ বিচার দেশের জন্য বিজয়।‘ কাসাবের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর তিনি এমন্তব্য করেছেন।
উজ্জল নিকম আরো বলেন, ফাঁসি কার্যকর হওয়ার মাধ্যমেওই ঘটনায় যেসব পুলিশ সদস্য ও নিরাপরাধ মানুষ জীবন দিয়েছেন আমরা তাদেরআত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারলাম।
চলতি মাসের ৫ তারিখে রাষ্ট্রপতিপ্রণব মুখার্জি কাসাবের প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেওয়ার পর ফাঁসিদেওয়ার সব বাঁধা দূর হয়ে যায়। প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার ২ দিনবাদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল সিন্ধে ফাঁসির আদেশপত্রে স্বাক্ষর করেন।
এরপর৮ নভেম্বর ফাঁসির আদেশপত্রটি পাঠিয়ে দেওয়া হয় মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে।উজ্জল নিকম বলেন, এ মামলার মাধ্যমে আমরা প্রমাণ উপস্থাপন করতে পেরেছি যে, মুম্বাই হামলার পেছনে সব ষড়যন্ত্রের মূল হোতাই ছিল পাকিস্তান।
উজ্জলনিকম আরো বলেন, আমরা উদাহরণ সৃষ্টি করেছি যে, ভারত এ ধরনের কান্ডের প্রতিকোনই সহানুভূতি দেখাবে না এবং অভিযুক্তকে অবশ্যই বিচারের কাঠ গড়ায়দাঁড়াতেই হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল সিন্ধে বলেছেন, কাসাবের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার সংবাদটি পাকিস্তানকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কাসাবও অপর ৯ পাকিস্তানি সন্ত্রাসী করাচি থেকে সমুদ্র পথে মৎস্যজীবীর ছদ্মবেশে২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর দক্ষিণ মুম্বাইয়ে গিয়ে পৌঁছায়।
মুম্বাই কান্ডে একমাত্র জীবিত হিসেবে ধরা পড়ে কাসাব। বাকীরা নিরাপত্তার বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারায়।
মহারাষ্ট্রেরমুখ্যমন্ত্রী পৃথভভিরাজ চ্যাবন সাংবাদিকদের বলেছেন, কাসাবের ফাঁসিকার্যকরের পর ইয়েরওয়াদা জেলখানা প্রাঙ্গণেই তার কবর দেওয়া হয়েছে।
২০০৮সালের ২৬ নভেম্বর কাসাব ও তার অস্ত্রধারী সঙ্গীরা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রনিয়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থাপনায় আক্রমণ করে। মুম্বাইয়ের বিলাসবহুল হোটেলতাজমহল ও ওবেরয় ট্রিডেন্ট, শহরের মূল রেলস্টেশন ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাল ওএকটি ইহুদি কেন্দ্রে হামলা করে তারা।
এ ঘটনায় ১৬৬ জন নিহত হয়। কাসাব ও তার সঙ্গীরা প্রায় তিনদিন ধরে মুম্বাই নগরী অবরোধ করে রাখে, সৃষ্টি হয় এক নারকীয় পরিস্থিতি।
এইঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে একমাত্র জীবিতভাবে ধরা পড়ে আজমল কাসাব। তারবিরুদ্ধে ২০১০ সালে মে মাসে হত্যা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লিপ্ত হওয়াসহ৮০টি অভিযোগ আনা হয়।
মামলা চলাকালীন সময়ে কাসাবের ডিএনএ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ থেকেপ্রমাণিত হয় যে তার ছুঁড়ে মারা এলোপাতাড়ি গুলি ও বোমা থেকে মানুষ নিহতহয়েছে।
নিউজরুম