রাবি’র সমাজকর্র্ম বিভাগ প্রয়োজন নেই, তবুও দলীয় শিক্ষক নিয়োগে প্রশাসনের পাঁয়তারা

0
190
Print Friendly, PDF & Email

এরশাদুল বারী কর্ণেল, রাবি(২০ নভেম্বর):প্রয়োজন না থাকলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগে দলীয় পছন্দের প্রার্থীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে প্রশাসন ও সংশি­ষ্ট বিভাগের আওয়ামীপন্থী প্রভাবশালী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নিয়োগ পাঁয়তারা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। বিভাগের সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগের বিরোধীতা করে আসলেও সম্প্রতি বিভাগের সভাপতি পদে নতুন করে সরকার সমর্থিত শিক্ষক দায়িত্ব পাওয়ায় তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে উঠে পড়ে লেগেছে। তবে বিভাগের প­‍ৃযানিং কমিটিতে নিয়োগ বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকায় পর পর তিনবার প­যানিং কমিটির বৈঠক ডেকেও নিয়োগ সংক্রান্ত কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বলে জানা গেছে।

সংশি­ষ্ট বিভাগের শিক্ষকরা জানান, সবচেয়ে কম সময়ে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন, ফল প্রকাশ, যথাসময়ে ক্লাশ-পরীক্ষা নেয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের চেয়ে সমাজকর্ম বিভাগ এগিয়ে। ফলে বিভাগটি অনেকাংশে সেশনজট মুক্ত।  বর্তমানে বিভাগটির ২১ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩ জন উচ্চতর গবেষণার কাজে শিক্ষা ছুটিতে দেশের বাইরে থাকলেও একাডেমিক ও শিক্ষা কার্যক্রমে কোন সমস্যা না হওয়ায় দলীয় ও কম যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়া হবে এমন আশংকায় বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষকরা নিয়োগের বিরোধীতা করেন। কিন্তু সম্প্রতি বিভাগের সভপতি পদে প্রফেসর ড. সৈয়দা আফরীনা মামুনের জায়গায় সরকার সমর্থিত প্রফেসর ড. শর্মিষ্ঠা রায় নতুন করে দয়িত্ব নিলে নিয়োগ নিয়ে সৃষ্টি হয় জটিলতা। বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি ও বিভাগের সভাপতিসহ প্রভাবশালী কয়েকজন শিক্ষক তাদের পছন্দের আত্মীয়-স্বজনদেরকে শিক্ষক নিয়োগ দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। এজন্য পর পর তিন বার বিভাগের প­্যানিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। কিন্তু প­্যানিং কমিটিতে নিয়োগ বিরোধীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় তারা নিয়োগের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তবে তারপরেও পছন্দের দলীয় প্রার্থীদের শিক্ষক নিয়োগ দিতে প্রশাসন ভিন্ন পন্থা খুঁজছে বলে জানা গেছে।

প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, বিভাগের প­্যনিং কমিটির অন্য সদস্যদের বাদ দিয়েই বিজ্ঞাপ্তি দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে প্রশাসন। তাও না হলে প­্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত ও সিন্ডিকেট ছাড়াই সম্প্রতি নিয়োগ দেয়া ফিশারিজ বিভাগের মতো ভিসির একক ক্ষমতায় সমাজকর্ম বিভাগেরও শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হতে পারে। তবে এরকম হলে বিভাগের শিক্ষকরা আন্দোলনে যাবেন বলে জানান সমাজকর্ম বিভাগের একাধিক শিক্ষক।

বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিভাগের সভাপতিসহ কয়েকজন প্রভাবশালী দলীয় শিক্ষকের আত্নীয়-স্বজন ও পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতেই মূলত বিভিন্নভাবে নিয়োগ তদবীর চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে বিভাগের বর্তমান সভপতির প্রার্থী হিসেবে বেশ কয়েকজন, আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও সাবেক সিন্ডিকেট সদস্যের নিকট আত্নীয়, সাবেক সহকারী প্রক্টর ও বর্তমানে একটি হলের প্রাধ্যক্ষের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওযার প্রক্রিয়া চলছে। তাছাড়া আইন বিভাগের সরকার সমর্থিত এক শিক্ষকের ভাইকে নিয়োগ দেয়ার জন্যও তদরিব করা হচ্ছে। এসব প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে মোটা অংকের নিয়োগ বাণিজ্যেরও অভিযোগ রয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বাজেট বরাদ্দের বাইরে অতিরিক্ত সব ধরণের নিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ওই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এবং বর্তমান প্রশাসনের আমলে এ পর্যন্ত ৩৭টি বিভাগ ও ৩টি ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞাপিত ১৮৬টি পদের বিপরীতে ৩০১জন শি্ক্ষক নিয়োগ দেয়ার পরেও নতুন করে সমাজকর্ম বিভাগে এ নিয়োগের পায়ঁতারা চলছে।

শেয়ার করুন