চিরবিদায় নিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব সুভাষ দত্ত। বাংলাদেশেরস্বাধীনতার ঊষালগ্নে যে ক’জন নির্মাতার হাতে বাংলা চলচ্চিত্র ‘আকৃতি’ পেতেশুরু করেছিল, সুভাষ দত্ত ছিলেন তাদের অন্যতম। এই কৃতীপুরুষ গত শুক্রবারসকাল ৭টার পর রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন রোডে নিজের বাড়িতে ৮২ বছর বয়সে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন চলচ্চিত্রের এই নন্দিত কারিগর। আমরা তার মৃত্যুতেগভীরভাবে শোকাহত। তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই আমাদের সমবেদনা।
ক্যামেরা-লাইট-অ্যাকশন।কাট-এগেইন রোল, শুটিং প্যাকআপ। এই সবগুলো শব্দ মাতাল করতো তাঁকে। জীবনেকতোবার এই শব্দ তিনি উচ্চারণ করেছেন তার কোনো হিসাব নেই। রূপালি জগতের এইপ্রেম তাঁকে ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছিল। মাত্র ২০ বছর বয়সে নন্দন নেশায় পথচলাশুরু করেন। এরপর ৩৫ মিলিমিটারের সেলুলয়েডে বন্দী করেন যাপিত জীবনের বোধ ওবোধনের সব গল্প। দীর্ঘপথ পেরিয়ে স্থির হন নন্দনযাত্রার এই ক্লান্তপরিব্রাজক। তারপর সব কিছু প্যাকআপ। চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের রাজপুত্রসুভাষ দত্ত। রূপালি জগতের আরো এক উজ্বল নক্ষত্রের পতন। নিয়তির কাছে নিজেকেসমর্পণের আগে প্রাপ্তি যেমন ছিল, অপূর্ণতাও কম ছিল না। সৃষ্টিশীল মানুষরাকখনো তৃপ্ত হতে পারেন না। সুভাষ দত্ত তাদেরই একজন। এক ধরনের অতৃপ্তি নিয়েইশেষ যাত্রার সারথী হলেন। শুভ্র দাড়ির সৌম্য বদনের মানুষটির দিকে তাকালে-উঁকি দেয় সেই অপূর্ণতা। তারপরও তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের বরপুত্রÑ অরুণোদয়েরঅগ্নিসাক্ষী।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ব্যক্তিত্ব হিসেবেবাংলা চলচ্চিত্রের কৃতী নির্মাতা সুভাষ দত্ত বাতিঘর হয়ে শ্রদ্ধার আসনে আসীনথাকবেন। তার সৃষ্টিগুলো আমাদের কাছে অমূল্য সম্পদ এবং একই সঙ্গে তারকর্মস্পৃহা, নিষ্ঠা, সুরুচি ও শিল্পবোধ এ দেশের ভাবীকালের চলচ্চিত্রকারদেরজন্য অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।