রুপসীবাংলা, ঢাকা (১৮ নভেম্বর) চার দিনবিরতি দিয়ে রোববার আবার মাঠে নামছে জামায়াত-শিবির। গত কয়েক দিনে সারাদেশে কর্মসূচি পালনকালে ব্যাপক তাণ্ডব ও পুলিশের ওপর হামলাসহ সহিংস ঘটনা ঘটায় তারা। এর চারদিন পর আবার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামছে জামায়াত।
শনিবার রাতে কেন্দ্রীয় জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ করা, আটক জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহালসহ পাঁচ দফা দাবিতে রোববার সারাদেশে কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রোববারের কর্মসূচি দেশের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলায় একযোগে পালিত হবে। তবে কর্মসূচি কি তা উল্লেখ করা হয়নি।
সূত্র জানায়, রোববারের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে শনিবার গভীর রাতে রাজধানীর কয়েকটি জায়গায় একাধিক সভা ও গোপন বৈঠক করেছে জামায়াত-শিবির। কর্মসূচি সফল করতে ৫০টি টিমও গঠন করে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তত রাখা হয়েছে ১০ হাজার সদস্যের স্কোয়াডকে।
জামায়াত-শিবিরের কয়েকটি সূত্র আরো বলছে, রোববার সপ্তাহের প্রথম দিন হওয়ার বিকালে অর্তকিত হামলা চালাবে তারা। শিবিরের বাছাইকৃত কর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন লোকাল ও সিটিং বাসগুলোতে যাত্রী বেশে উঠবেন।তারপর নিরাপদ জায়গায় নেমে একযোগে মিছিল বের করে অতর্কিত হামলা চালাবেন।জামায়াতের একটি সূত্র বলছে, কর্মসূচি জামায়াতের হলেও রোববারও বরাবরের মতোই মাঠে থাকবে শিবির। এ লক্ষ্যে শিবিরকে পুরোপুরি প্রস্তত করে রাখা হয়েছে।
চারদিন বিরতির পর আবার রাজপথে নামার বিষয়টি স্বীকার করে জামায়াতে কেন্দ্রীয় এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘৫ ও ৬ নভেম্বর পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে দেয়নি। তাই আজকের কি কর্মসূচি তা কৌশলগত কারণে জানানো হয়নি।’’
রোববার আবার সহিংস কোনো কর্মসূচি আছে কি না জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে চাই। সরকার যদি আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেয়, তবে বিকল্প ব্যবস্থায় আমাদের মাঠে নামতে হবে।’’গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র জানিয়েছে, জামায়াত-শিবির আবারো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে, এ রকম তথ্য তাদের কাছেও আছে। তাদের যে কোনো অপতৎপরতা ঠেকাতে সব ধরনের প্রস্ততিও রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর।
জামায়াত-শিবিরের যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র আরো বলছে, এর আগে যেসব জায়গায় জামায়াত-শিবির নাশকতা ঘটিয়েছে সেসব জায়গায় নতুন করে তারা আর নামবে না। তারা নতুন নতুন জায়গায় ঝটিকা মিছিল বের করে কয়েক মিনিটে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাবে। তাদের এসব অপতৎপরতা রুখতে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার ফোর্স রাজধানী বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে এবং তারা রোববার ভোর থেকে কাজ শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, একই দাবিতে গত ৫ থেকে ১৩ নভেম্বর কেন্দ্র-ঘোষিত কর্মসূচি পালন করে জামায়াত। জামায়াতের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত ৫ নভেম্বর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ-জামায়াতের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।জামায়াত-শিবিরের হামলায় দেশের ৩২টি জেলায় ২ শতাধিক পুলিশ সদস্য আহত হন।রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ চলাকালে যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করাসহ আইনমন্ত্রীর গাড়িবহরে হামলা চালায় জামায়াত-শিবিরের মারমুখি কর্মীরা।
নিউজরুম