রুপসীবাংলা, ঢাকা (১৪ নভেম্বর) :স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েকদিন ধরে জামায়াত-শিবির যে তাণ্ডবচালাচ্ছে, তার নেপথ্যে রয়েছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল।তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এই তাণ্ডবের পেছনে বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতার জড়িত থাকারসুনির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে। আমরা তাণ্ডবে জড়িতদের সবাইকে খুঁজে বের করবো।এবং তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’’স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-শৃঙ্খলা কমিটির ১২তম বৈঠক শেষে বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।তিনিআরো বলেন, ইতিমধ্যেই জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত ২ হাজারের বেশিব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগত কয়েকদিনে যথেষ্ট সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীবলেন, ‘‘জামায়াত এবং কয়েকটি ধর্মান্ধ রাজনৈতিক দল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারবন্ধের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে। আমরাএগুলো কঠোর হাতে দমন করবো।’’জামায়াত-শিবিরের চোরাগোপ্তা হামলায়বিএনপির প্রশ্রয়কে দায়ী করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, “যারা চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছেন, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে দৃঢ়ভাবেতাদের দমন করা হবে। আর এ ধরনের কাজ করার যাতে কেউ সাহস না পান, সেব্যাপারেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
ইতিমধ্যেই জামায়াত-শিবিরেরতাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত ২ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবেসরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত কয়েকদিনে যথেষ্ট সহনশীলতার পরিচয়দিয়েছে। এর পরেও যারা এ সব এ কর্মকাণ্ড ঘটাবেন, তাদের রাষ্ট্রের সর্বোচ্চশক্তি দিয়ে প্রতিহত করা হবে বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পুলিশেরওপর হামলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার মানুষেরঅধিকারে বিশ্বাসী। পুলিশ বাহিনী ও যানবাহনের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।কিন্তু পুলিশ গুলি চালায়নি।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবেস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এই ঘটনায় অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও কতিপয়রাজনৈতিক নেতার সংশ্লিষ্টতার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে।”অপরাধ যারা করছেন, আর যারা গাঁটছড়া বেঁধেছেন তাদের বিরুদ্ধে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।মহীউদ্দিনখান আলমগীর বলেন, যারা বলেন, সাম্প্রদায়িকতা পছন্দ করেন না, তারাইজামায়াতকে নিয়ে সফর করছেন, গাঁটছড়া বাধছেন।
তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়াহবে।অন্য রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলেও তারাকারা তা প্রকাশ করা হচ্ছে না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীবলেন, সব সময়, সব তথ্য, জনস্বার্থে সবার কাছে প্রকাশ করা যায় না। তবে যারাএটা সমর্থন করেছেন তারা পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করে বিবৃতিদেননি।বৈঠকে জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবে দোষীদের খুঁজে বের করাএবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য করণীয় নির্ধারণে আলোচনা ওসিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরাসর্বশক্তি দিয়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টাকরবো।’’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, বৈঠকে মাদক চোরাচালানবন্ধ, পরিবেশ উন্নয়ন এবং খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক সংমিশ্রণ রোধে কঠোরব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে।আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে করণীয় ও কর্মপদ্ধতি গ্রহণের এই বৈঠকেস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, ডাক ওটেলিযোগাযোগ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দিনআজমেদ রাজু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবিএম তাজুলইসলাম, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, মন্ত্রিপরিষদসচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা, স্বরাষ্ট সচিব সিকিউকে মোস্তাক এবংআইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নিউজরুম