রুপসীবাংলা, চট্টগ্রাম (১৪ নভেম্বর) :চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় নগরীরবন্দর পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন হাবিলদার গোলাম রসুলকে আসামীপক্ষের আইনজীবীদেরজেরা শেষ হয়েছে।বুধবার গোলাম রসুলের জেরা শেষে চট্টগ্রামেরস্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মুজিবুর রহমান আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত এ মামলার কার্যক্রম মূলতবি করেন। বৃহস্পতিবার অস্ত্রআটক মামলার বাদি ও কর্ণফুলী থানার তৎকালীন ওসি আহাদুর রহমানেরসাক্ষ্যগ্রহণের কথা রয়েছে।
বুধবার দুপুর পৌনে ১টা থেকে সোয়া দু`টাপর্যন্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবীঅ্যাডভোকেট আব্দুস সোবহান তরফদার হাবিলদার গোলাম রসুলকে জেরা করেন। এর মধ্যদিয়েই গোলাম রসুলের টানা তিন দিনব্যাপী জেরা শেষ হয়।
দশ ট্রাকঅস্ত্র আটকের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী হাবিলদার গোলাম রসুলগত ৩১ অক্টোবর এ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর তাকে ১ নভেম্বর দিনভরজেরা করেন বেশ কয়েকজন আসামীর আইনজীবী। এরপর গতকাল (মঙ্গলবার)ও তাকে দিনভরজেরা করেন আসামীপক্ষের আইনজীবীরা।এদিকে আসামিদের মধ্যে যারা আদালতেহাজির ছিলেন, তারা হলেন, জামায়াত নেতা ও বিএনপি সরকারের শিল্পমন্ত্রীমাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামানবাবর, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র তৎকালীন মহাপরিচালকঅবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থাডিজিএফআই’র তৎকালীন পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দারচৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন, উপ-পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা সিইউএফএল’র সাবেক এমডি মোহসীন তালুকদার, সিইউএফএল’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এনামুল হক, চোরাচালানি হিসেবেঅভিযুক্ত হাফিজুর রহমান ও ট্রলারমালিক দীন মোহাম্মদ।
এ ছাড়া সম্পূরকচার্জশিটভুক্ত দুআসামি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশনফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া ও শিল্প মন্ত্রণালয়েরসাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নূরুল আমিন বর্তমানে পলাতক আছেন।
২০০৪ সালের ১এপ্রিল রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) জেটিঘাটে দশ ট্রাক অস্ত্রের চালানটি ধরা পড়ে।বিগততত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকে প্রায় সাড়ে তিন বছর অধিকতর তদন্তের পর ২০১১সালের ২৬ জুন সিআইডি আদালতে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার সম্পূরক চার্জশিট দাখিলকরেন।
এরপর ওই বছরের ১৫ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়েশুরু হয়েছে বিচার।
সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিলের পর এ মামলায়তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক শিল্পসচিব ড. শোয়েব আহমেদ, গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএইফআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেলসাদিক হাসান রুমি, বিসিআইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেলইমামুজ্জামান বীরবিক্রম, এনএসআই’র সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ারজেনারেল এনামুর রহমান চৌধুরী, ডিজিএফআ’র সাবেক ডিটাচমেন্ট কমান্ডার কর্নেল (অব.) একেএম রেজাউর রহমান, এনএসআই’র সাবেক সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলী এবংসিএমপি’র বন্দর জোনের তৎকালীন উপ-পুলিশ কমিশনার আবদুল্লাহ হেল বাকী, সাবেকডিআইজি (এসবি) শামসুল ইসলাম, সাবেক ডিআইজি (সিআইডি) ফররুখ আহমেদ, সহকারীপুলিশ কমিশনার মাহমুদুর রহমান, সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন, সার্জেন্টআলাউদ্দিন, গ্রীণওয়েজ ট্রান্সপোর্টের মালিক হাবিবুর রহমান, ম্যানেজার তসলিমমল্লিক, ট্রাক ভাড়া করার মধ্যস্থতাকারী শেখ আহমদ এবং হাবিলদার গোলামরসুলসহ ১৬ জন ইতোমধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
নিউজরুম