রুপসীবাংলা, ঝালকাঠি (১১ নভেম্বর) : ‘র্যাবের কথিত সোর্স ইব্রাহীমকে আইনের আওতায়আনা হোক। কেন সে আমার পরিবারকে মিথ্যা হত্যার অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেছে? নতুন করে এ ঘটনার দুশ্চিন্তায় সঠিকভাবে লেখাপড়া ও ঘুমাতে পারিনি। পাহারানোর পরেও আমার ও পরিবারের ওপরে হামলা হয়েছে, এখনো আমার জীবনেরনিরাপত্তা নেই। ইব্রাহীমের ভয়ে বাড়ি যেতে হয় পুলিশ পাহারায়’ বলে অভিযোগকরেছে, র্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠি রাজাপুরের কলেজছাত্র মো. লিমনহোসেন।
তিনি বলেন, যে র্যাব সদস্যরা আমার পায়ে গুলি করেছে, তাদের বিচার করা হোক। আমি তাদের বিচার চাই।”
তিনি বলেন, “জেলা প্রশাসকের ‘আপোশ প্রস্তাব’ তাদের বিচারের কাঠগোড়ায় দাঁড় করাতে কোনো প্রভাব ফেলবে না।”
লিমনের পরিবার ফোরকান হত্যা মামলা থেকে দায়মুক্ত হওয়ায় বাংলানিউজের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এসব কথা লিমন।
লিমনবলেন, “ঈদের দিন বাড়ি থেকে পিরোজপুরের কাউখালী ফেরার পথে ইব্রাহীম আমার ওআমার পরিবারের সদস্যরা ওপর হামলা করেছে। ঘটনা শুনে পথিমধ্যে ফোরকান আসারপথে হামলা স্থলের প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়েমারা যান।”
তিনি বলেন, “হামলার পর আমার মা জিডি করার পর পুলিশহামলার সত্যতা পেলেও ইব্রাহীম ফোরকান হত্যা মামলা সাজিয়ে আমাদের হয়রানিকরেছে। আমরা এখন্র নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। বাড়ি যেতে হলে পুলিশ সঙ্গে নিয়েযেতে হয়। অনেক আগেই ইব্রাহীম তার দলবল নিয়ে আমাদের বাড়িছাড়া করার হুমকিদিয়েছিল। তার ভয়ে এখনও আমরা পিরোজপুরের কাউখালী ভাড়া বাসায় থাকছি।”
জেলাপ্রশাসক অশোক কুমার বিশ্বাসের ‘আপস প্রস্তাব’ প্রসঙ্গে লিমন জানান, তার এপ্রস্তাবের নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। তা না হলে তিনি একথা কেনগোপন রাখতে বলেছেন। তিনি কি জানতেন না, ইতোপূর্বে আমার চিকিৎসা চলাকালেহাইকোর্টের এক আদেশে সরকারকে আমার সুচিকিৎসা করার নির্দেশ দেওয়া হয়।সুচিকিৎসা দেওয়া তো দূরের কথা, সরকারের কোনো প্রতিনিধি একদিনও আমারখোঁজখবর নেয়নি। আমি গুলি খেয়ে পঙ্গু হওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎপেতে চেয়েছি মিডিয়ার মাধ্যমে। তিনি কি আমার এ অনুরোধ শুনতে পাননি?”
লিমনতার কানের সমস্যার বিষয়ে বলেন, “ইব্রাহীমের হামলার সময় সে আমাকে কানেথাপ্পড় মারে। এ ঘটনায় আমার আরেকটি অঙ্গহানি হতে চলছে। দ্রুত কানের চিকিৎসানা হলে যে কোনো সময় শ্রবণ প্রতিবন্ধী হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। বরিশালেকানের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, এ জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা করাপ্রয়োজন।”
লিমনের প্রশ্ন- “কিন্তু এ চিকিৎসার টাকা কোথায় পাবো? এরাষ্ট্রের কাছে আমার জিজ্ঞাসা, র্যাবের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করারউদ্যোগ কি নেবে না সরকার? আমার জীবনকে পঙ্গু করার জন্য মায়ের দায়ের করামামলায় দায়ীদের বিচারের কাঠগোড়ায় দাঁড় করানো হবে না? আমি কি পঙ্গু জীবনেরবিনিময়ে ন্যায় বিচার আশা করতে পারি না, যা আমার বাকি জীবনের পথ চলারসান্ত্বনা হবে।”
লিমনের শেষ প্রশ্ন, “এ দেশের নাগরিক হিসেবে এটুকুকি আমি রাষ্ট্রের কাছে আশা করতে পারিনা? ইব্রাহীমরা কি অন্যায় করেওর্যাবের সোর্সের দোহাই দিয়ে আইনের ঊর্ধ্বেই থেকে যাবে?”
নিউজরুম