রুপসীবাংলা, ঢাকা ৯ নভেম্বর :জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আগামী ৩ মাসের মধ্যেবাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অবকাঠামোর দিক থেকে সুরক্ষা জোরদার করা উচিৎ। এজন্যই বাংলাদেশ সরকার এ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।<br>
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ উইংয়ের মহাপরিচালক সাইদা মোনা তাসনিম বাংলানিউজকে একথা জানান। <br>
এবিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের বাজেটের মধ্যে কাজ করে যাচ্ছে।মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় তোলারকোনো প্রয়োজন নেই বলে জানান তিনি। <br>
সাইদা মোনা তাসনিম জানান, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদী সংলগ্ন প্রায় ৫০ কিলোমিটার একটি বাঁধনষ্ট হয়ে গেছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেই বাঁধপুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। এ ভাঙা বাঁধের সুবিধা নিয়েই রোহিঙ্গারাবাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাঁধ সংস্কার হলে বিজিবি সহজেই এ এলাকায় টহল দিতেপারবে ।এ বিষয়ে অন্য এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, রোহিঙ্গাদেরঅনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকরতে চায় ঢাকা। এ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের আগেই মিয়ানমারকে তা অবহিত করতেচায় বাংলাদেশ। এ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হবে প্রায় ২০০ মাইল এলাকাজুড়ে।<br>
বাংলাদেশের অবস্থান জানাতে মিয়ানমারকে জানিয়ে রাখতেমিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল অনুপ কুমার চাকমাকেসে দেশের সংশ্লিষ্টদের কাছে এ চিঠি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। ওইকর্মকর্তা আরও জানান, মিয়ানমার সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটার সীমানা রয়েছে দুই দেশের। মিয়ানমার ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে নিজ সীমান্তে ১২০ কিলোমিটারদীর্ঘ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে। তখন বাংলাদেশ থেকে প্রতিবাদ করাহয়েছিল কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের বিরুদ্ধে। কিন্তু এখন বাংলাদেশও এ বিষয়েসিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।তবে এ বেড়া নির্মাণের ফলে সুবিধা ও অসুবিধা দুইই রয়েছে বলে জানান তিনি।<br>
তিনিজানান, প্রথমত বাংলাদেশ পূর্বে ভারত ও মিয়ানমার দুই দেশের কাঁটাতারের বেড়ানির্মাণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এখন তাদের এ বেড়া নির্মাণের বিষয়েকোনো কথা বলার নৈতিক অধিকার হারাবে ঢাকা। দ্বিতীয়ত, মিয়ানমারেরপ্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তাদেরপ্রত্যাবর্তনে সংকটে পড়তে পারে বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে প্রায় ৪হাজার কিলোমিটার ও মিয়ানমারের সঙ্গে ২৭১ কিলোমিটার বাংলাদেশের সীমানারয়েছে। কিন্তু এখনও ভারতের সঙ্গে সীমানা সম্পূর্ণভাবে নির্ধারণ করা সম্ভবহয়নি।<br>
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার এ অঞ্চলে কাঁটাতারের বেড়াবাংলাদেশের জন্য উপযোগী নয়। কারণ, বাংলাদেশের মতো এত অধিক ঘনবসতিপূর্ণ দেশেনিজেদের কাঁটাতারের মধ্যে ঘিরে ফেলা দেশের আর্থ-সামাজিক সংকট সৃষ্টি করবে।কারণ, এখন শত শত মানুষ এ দু’টি দেশে বৈধ অনুমতি ছাড়াই অবারিত যাতায়াত করেথাকে, যা এসব দেশের কর্তৃপক্ষও জানে।তাছাড়া মিয়ানমার থেকে বৈধ ও অবৈধ পথে যে বাণিজ্য চলে তা থেকে মিয়ানমার বেশি সুবিধা আদায় করতে পারবে।মিয়ানমারতোচাইছেই কাঁটাতারের বেড়া দিতে। এখন তাদের কাজটি বাংলাদেশ নিজের অর্থে করতেউদ্যোগী হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশের মতো গরিব দেশের পক্ষে এতো বড় তারকাঁটারবেড়ার ব্যবস্থাপনা করতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন পড়বে। <br>
তারকাঁটারবেড়া নির্মাণের কয়েক বছর ব্যবস্থাপনার অভাবে এর ফাঁক-ফোকর দিয়ে রোহিঙ্গা ওমাদক পাচার হলে এর দায় সহজে এড়িয়ে চলতে পারবে মিয়ানমার।<br>