রুপসীবাংলা, ঢাকা ৯নভেম্বর :আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মতে, এক সময় জাল নোটতৈরির সঙ্গে শুধু পুরুষরা জড়িত থাকলেও এখন নারীরা এই চক্রের সঙ্গে জড়িয়েপড়ছেন। চক্রে নারী সদস্য বাড়ছে, যা উদ্বেগজনক। জাল নোট চক্র নারীদেরমাধ্যমে নোট তৈরির উপাদান সংগ্রহ করছে। আর ঘরের কাজগুলো করছেন পুরুষরা।
তাদেরমতে, জাল নোট তৈরি চক্র প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে থাকে। সীমিতজনবল এবং প্রশিক্ষণের অভাবে তাদের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে পেরে ওঠে নাআইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।বৃহস্পতিবার বিকেলেবাংলাদেশ ব্যাংক মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারীবিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীরসদস্যরা তাদের বক্তব্যে এসব কথা বলেন।কোরবানির হাটে জাল নোট প্রতিরোধে দায়িত্ব পালন করার স্বীকৃতি প্রদান উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কারেন্সি ব্যবস্থাপনা বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম।অনুষ্ঠানেমাঠ পর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগরপুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মশিউর রহমান, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই) পরিচালক লে. কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রতিনিধি মেজর আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের প্রতিনিধি সহকারীপুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) উপপরিচালকবদরুল আহসান প্রমুখ।তাদের মতে, বাংলাদেশে এখন আর বিদেশ থেকে জালনোট আসে না। সব দেশেই তৈরি হচ্ছে এটি।
বরং বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে জালনোট যাচ্ছে। তবে, দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে চক্র বিদেশ থেকেনোট তৈরি করে আনার উদ্যোগ নিতে পারে।এ চক্র তাদের আস্তানা হিসেবেঘনবসতি এলাকাকে বেছে নেয়। আর এমন বাড়ি ভাড়া নিয়ে তারা কারখানা করে, যারবাড়ির মালিক বিদেশ থাকে অথবা অন্য কোনো জায়গায় থাকে।
অনুষ্ঠানেআবুল কাশেম বলেন, “জাল নোট সনাক্তকারী মেশিন দিয়ে জাল নোট শতভাগ শনাক্ত করাযায় না। তবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের এ ব্যাপারে ভূমিকাবেশি। তাদের উপস্থিতিই চক্রকে সাবধান করে দেয়।
তিনি বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে। জাল নোট তৈরি চক্রকে প্রতিরোধ করা না গেলে তারা অন্য অপরাধে জড়িয়ে সামাজিক অস্থিরতা বাড়াবে।”মশিউররহমান বলেন, “জাল নোট তৈরির সঙ্গে আগে শুধু পুরুষরা জড়িত থাকতেন। ইদানিংনারী সদস্য বাড়ছে। তাদের উপাদান সংগ্রহে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি বেশি ক্ষতিহচ্ছে।”
তিনি বলেন, “২০১২ সালে এ পর্যন্ত মোট ১৭টি ঘটনা আমরাউদঘাটন করেছি। এর মধ্যে ৬টি কারখানা সংশ্লিষ্ট। ২ থেকে আড়াই লাখ টাকায় জালনোটের কারখানা করা যায়। জাল নোট তেরি চক্র রাজধানীর ঘনবসতি এলাকাকে এ জন্যব্যবহার করে। আর এমন বাড়ি ভাড়া নেয় যার বাড়িওয়ালা থাকে না।”মশিউর আরও বলেন, “আমাদের ধারণা ছিলো, সীমান্ত দিয়ে দেশে জাল নোট আসে।
তবে সেটি আর হচ্ছে না।” বদরুল আহসান বলেন, “জাল নোটের সঙ্গে অন্য অপরাধের একটা সম্পর্ক রয়েছে। জাল নোট মাদক ও হেরোইন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত।” সাইফুলইসলাম বলেন, “অপরাধীরা আধুনিক প্রযুক্তি এবং নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে।সীমিত জনবল আর প্রশিক্ষণের অভাবে তাদের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে পারা যায় না।” আব্দুল্লাহআল মামুন বলেন, “এখন দৃশ্যমতে সীমান্ত দিয়ে আর জাল নোট আসে না। তবে এদেশথেকে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে চলে যাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।