আলোচিত এইট মার্ডার মামলার মৃত্যুণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি সাজ্জাদ ভারতে গ্রেফতার

0
327
Print Friendly, PDF & Email

রুপসীবাংলঅ চট্টগ্রাম ৯ নভেম্বর :চট্টগ্রামের এক সময়ের মূর্তিমান আতঙ্ক, পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার, আলোচিত এইটমার্ডার মামলার মৃত্যুণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি সাজ্জাদ আলী খান ভারতেগ্রেফতার হয়েছেনআন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থার (ইন্টারপোল) পক্ষ থেকেবৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পুলিশের সদর দফতরে মোস্ট ওয়ান্টেডআসামি সাজ্জাদআলী খানের গ্রেফতারের বিষয়টি জানানো হয়েছে

 

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) বনজ কুমার মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেনতিনিবলেন, “সাজ্জাদ ভারতের কোলকাতায় গ্রেফতার হয়েছেন এতটুকু জানিতবে কখন, কোথা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে বিষয়টি আমরা এখনও নিশ্চিতনানাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তাবাংলানিউজকে জানান, গত মঙ্গলবার কোলকাতায় গ্রেফতার হন সাজ্জাদতার পরিচয়নিশ্চিত করার জন্য বৃহস্পতিবার বিষয়টি বাংলাদেশের পুলিশ সদর দফতরকেইন্টারপোলের পক্ষ থেকে জানানো হয়

 

 
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতর থেকে নগর পুলিশের বিশেষ শাখায় সাজ্জাদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়বিষয়ে জানতে চাইলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার তারেকআহম্মেদ বলেন, “সাজ্জাদ ভারতের কোলকাতায় গ্রেফতার হয়েছেন বলেশুনেছিইন্টারপোলই বিষয়টি পুলিশ সদর দফতরকে জানিয়েছেযেহেতু সাজ্জাদআমাদেরও মোস্ট ওয়ান্টেড আসামি ছিল, তাই তার বিষয়ে আমরা সব ধরনের তথ্য নেবচট্টগ্রামেএক সময়ের মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে পরিচিত এ সন্ত্রাসী দুবাইয়ে বসেই নগরীরপাঁচলাইশ, চালিত্যাতলী, অক্সিজেন, মুরাদপুর, চকবাজার, বায়েজিদ, হাটহাজারীসহবিশাল এলাকায় তার আধিপত্য বজায় রেখেছিলেনতার নামেই এসব এলাকায় চলছেব্যাপক চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড

আর এ কাজেসাজ্জাদ এলাকার উঠতি যুবকদের ব্যবহার করছিলন বলে নগর পুলিশের কাছে তথ্যছিলতবে সাজ্জাদ মধ্যপ্রাচ্য থেকে কবে ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন সে বিষয়েপুলিশের কাছে কোনো তথ্য ছিলো নানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্তউপ-কমিশনার তারিক আহম্মদ খান বলেন, “সাজ্জাদের নামে দীর্ঘদিনধরে চাঁদাবাজি হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর আছেবিশেষত জমি কেনাবেচাকেকেন্দ্র করে এ চাঁদাবাজিটা হচ্ছেআমরা বিভিন্ন সূত্রে খবর পেলেও কেউসরাসরি আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেননি

 

গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতেনগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন এলাকায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়িউপজেলার হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরীর বাড়িতে ঢুকেগুলি চালান একদল ক্যাডারএ সময় তারা চেয়ারম্যানের মালিকানাধীন একটিনির্মাণ প্রতিষ্ঠানের মালিকের গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেনএ ঘটনার পর শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের নাম অনেকদিন পর আবারও আলোচনায় উঠে আসেনগর পুলিশ কর্মকর্তারাও সাজ্জাদের বিষয়ে তপর হন

নগরীরঅক্সিজেন মোড় থেকে হাটহাজারী উপজেলার সঙ্গে সংযোগ সৃষ্টিকারীঅক্সিজেন-কুয়াইশ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছেএছাড়া ওই এলাকায় চট্টগ্রাম উন্নয়নকর্তৃপক্ষ (চউক)অনন্যানামে একটি আবাসিক এলাকা গড়ে তোলার কাজে হাতদিয়েছে

মূলত সংযোগ সড়ক এবং আবাসিক এলাকা পাল্টে দিয়েছে ওই এলাকারদৃশ্যপটবর্তমানে ওই এলাকায় দ্রুত জমির দাম বাড়ছেএতে নির্মাণপ্রতিষ্ঠানের মালিকরা ওই এলাকায় জমি কেনাবেচা নিয়ে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগশুরু করেনফলে ওই এলাকায় জায়গা জমি কেনা বেচাকে কেন্দ্র করে একটি চক্রওগড়ে ওঠেঅনুসন্ধানে জানা গেছে, জমি দখলকে কেন্দ্র করে শিবিরক্যাডার সাজ্জাদের নির্দেশে তার সহযোগীরা ব্যাপক অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড এবংবেপরোয়া চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েনজমির মালিকদের কাছ থেকে বিক্রির সময় টাকাআদায়ের পাশাপাশি ক্রেতার কাছ থেকেও টাকা আদায় করছেন সাজ্জাদ বাহিনীরক্যাডাররা

 

গত বছরের আগস্টে সাজ্জাদের দুই সহযোগী সরওয়ার ওম্যাক্সনকে একটি একে-৪৭ রাইফেলসহ বায়েজিদ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বায়েজিদবোস্তামি থানার তকালীন ওসি এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিমএ বিষয়েনগরীর কোতোয়াwল থানায় দায়িত্বরত ওসি এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম বাংলানিউজকেবলেন, “সাজ্জাদ সবসময় কিছু উঠতি যুবককে সন্ত্রাসী কাজে লাগানআমি দায়িত্বপালনকালে তারা এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেনএখন শুনছি আবারও এলাকায় এসেচাঁদাবাজি শুরু করেছেন

পুলিশ সূত্র জানায়, সাজ্জাদ সর্বশেষ ২০০১সালের ৩ অক্টোবর বন্দুকযুদ্ধের পর তার সহযোগী ও দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডারদেলোয়ার হোসেন ওরফে আজরাইল দেলোয়ারসহ নগরীর চালিতাতলী এলাকা থেকে গ্রেফতারহনওই সময় তার কাছ থেকে পুলিশ একটি একে-৪৭ রাইফেল উদ্ধার করে২০০৫ সালে আজরাইল দেলোয়ার জামিনে মুক্তি পানএরপর র‌্যাবের ক্রসফায়ারেআজরাইল দেলোয়ার নিহত হন

 

তিনবছর জেল খেটে দেলোয়ারের আগেই সাজ্জাদ ২০০৪ সালে জামিনে মুক্তি পানএরপরকুমিল্লার তকালীন জামায়াতের  সাংসদ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের গাড়িতেকরে  পুলিশের গ্রেফতার এড়িয়ে কারাগার প্রাঙ্গY ত্যাগ করেন সাজ্জাদ২০০৪সালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির মুখে তকালীন জোট সরকার র‌্যাপিডঅ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) গঠনের পর সাজ্জাদ আলী খান দুবাইয়ে পালিয়ে যান

 

 

 

নিউজরুম

 

শেয়ার করুন