দেশে গত এক দশকে সব ধরনের হৃদরোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার খবরটি নিঃসন্দেহেউদ্বেগজনক। অসংক্রামক এ ব্যাধির তালিকায় রয়েছে নারী, পুরুষ ও শিশু। আগেধারণা করা হতো, শিশু-কিশোরদের হৃদরোগ হয় না। এ ধারণা ঠিক নয়। দেশে বাতজনিতশিশু হৃদরোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে।
সে তুলনায় চিকিৎসা ব্যবস্থাঅপ্রতুল ও অপর্যাপ্ত। সম্প্রতি প্রকাশিত স্বাস্থ্য বুলেটিন-২০১২ তেপ্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে ২০০২ সালেযেখানে রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৬ হাজার ৯৪৪, সেখানে এক দশকের ব্যবধানে তাবেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮১৩-তে। এর বাইরেও রয়েছে অন্যান্য সরকারিহাসপাতাল ও হেলথ কমপে¬ক্সসহ কয়েকটি বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতাল। সবাই যেহাসপাতালের তালিকাভুক্ত হতে পারেন তা নয়। অজ্ঞানতা ও দরিদ্রতাবশত অনেকেহৃদরোগে আক্রান্তের খবর না জেনেই ঢোলে পড়েন মৃত্যুর কোলে। আবার অনেকেইঅভাবের কারণে থেকে যান চিকিৎসার আওতার বাইরে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমানে হৃদরোগ বিশ্বের এক নম্বর হন্তারক ব্যাধি।প্রধানত খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, ভেজাল খাদ্যদ্রব্য, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, কায়িক পরিশ্রম না করা, ধূমপান ও তামাক সেবন, পান-সুপারি খাওয়া, জাঙ্ক বাফাস্টফুড, কোমল পানীয় ও মাদকাসক্তি, পারিবারিক ও কর্মস্থলে অতিরিক্ত মানসিকচাপ বা স্ট্রেস, দ্রুত নগরায়ন সর্বোপরি পরিবেশ ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলেবাড়ছে হৃদরোগীর সংখ্যা। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসার স্থল সরকারতথা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতীয় বাজেটে পর্যায়ক্রমে বরাদ্দ বাড়িয়ে দেশেহৃদরোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা উচিত বলে আমরা মনে করি।