ঢাকা রুপসীবাংলা ডেস্ক:
স্থানীয় সরকার কমিশন গঠন না হলে আর্থিক বণ্টন ও বাজেট কখনই সঠিকজায়গায় পৌঁছাতে পারবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা।প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে টাকার অংক বাড়লেও প্রকৃত বরাদ্দ কম। গতকাল সিরডাপমিলনায়তনে ৩৫ সংগঠনের প্ল্যাটফরম গভার্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ও স্থানীয় সরকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় স্থানীয়সরকার বিশেষজ্ঞরা এ অভিমত প্রকাশ করেন। পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন বিষয়েবাজেটে যদি কোনো পরিকল্পনা না থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে কঠিন পরিস্থিতিরমুখোমুখি হতে হবে বলে হুশিয়ার করেন তারা।
জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকেআমলাতান্ত্রিকতা থেকে মুক্ত রেখে স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের দাবিতে ৭ দফাসুপারিশ সরকারের উদ্দেশে তুলে ধরে গভার্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম।সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ীকমিটির সভাপতি আলহাজ অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলী এমপি বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকারআইন আছে কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না—তা একশ’ ভাগ সত্য।
রহমত আলী আরও বলেন, প্রকৃত উন্নয়ন চাইলে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ যেতে হবে।কারণ হিসেবে তিনি আরও বলেন, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নগুলোর উন্নয়নের জন্যপাঠানো অর্থের শতকরা ১০ ভাগ ডিসি অফিস রেখে দেয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ খুব বেশি বাড়ানো নাগেলেও কিছুটা হলেও করা দরকার। ইউনিয়ন পরিষদ যে ভূমি হস্তান্তর করের ১শতাংশ পায়, তা ১০ শতাংশ না হলেও অন্তত ৫ শতাংশ করা উচিত। এডিপির যে টাকাটাসরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের জন্য বরাদ্দ—তা যেন ঠিকমত তারা পায়, সেটা নিশ্চিতকরতে হবে।
এ সময় উপস্থাপিত প্রবন্ধে প্রস্তাবিত বাজেটে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোরজন্য প্রকৃত বরাদ্দের তথ্য তুলে ধরে ফোরামের সমন্বয়কারী মহসিন আলী বলেন, বেশ ক’বছর ধরে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এ বরাদ্দ, বিশেষ করেবর্তমান সরকারের আমলে তা বেশিরভাগ সময়ই ১ ভাগেরও নিচে ছিল। বরাদ্দের এপ্রবণতাটিকে বলা যায় ক্রমহ্রাসমান। বর্তমান সরকারের এটি চতুর্থ বাজেট। আমরাযদি এ সরকার ঘোষিত চারটি অর্থবছরে স্থানীয় সরকারের জন্য প্রকৃত বরাদ্দেরপরিমাণের দিকে নজর দেই, তাহলে দেখব টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেলেও তাপ্রকৃত বরাদ্দ সম্পর্কে কোনো সঠিক ধারণা দেয় না। সভায় আরও বক্তব্য রাখেনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমএম আকাশ। তিনি বাজেটের সংখ্যাতাত্ত্বিকবিশ্লেষণ করে তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদের হতাশাজনকপ্রাপ্তির তথ্য তুলে ধরেন। তিনি প্রকৃত উন্নয়নের জন্য এমপিদের গুরুত্বপূর্ণভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
ম্যাব মহাসচিব ও ‘রুপসীবাংলা নিউজ ডটকম’ সম্পাদক, অধ্যাপক শামিম আল রাজি বলেন, আর্থিকবণ্টনের কোনো নীতিমালা বা স্থানীয় সরকার কমিশন করা না হলে এ বাজেট কখনই ঠিকজায়গায় পৌঁছতে পারবে না। নগর সরকার নিয়ে কোনো কথা নেই এবারের বাজেটে।পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন বিষয়ে বাজেটে যদি কোনো পরিকল্পনা না থাকে, তাহলেভবিষ্যতে একটি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গভার্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরামেরপক্ষ থেকে ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক রতন, স্যাপ বাংলাদেশেরনির্বাহী পরিচালক সৈয়দ নুরুল আলম, পূর্ণিমাগাতির প্রাক্তন ইউপি চেয়ারম্যানখোরশেদ আলম প্রমুখ।
সম্পাদনা আলীরাজ/ রাফি, নিউজরুম