যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভরত জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে সোমবার বিকালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের সময় পুলিশের একটি পিকআপ, বিআরটিসির একটি বাস এবং বেশ কয়েকটি মটর সাইকেলে আগুন দেয় জামায়াতকর্মীরা। নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় এই সংঘর্ষের সময় সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অফিস থেকে বেরিয়ে বিপাকে পড়েন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। বিকাল পৌনে ৫টা থেকে পৌনে ৬টা পর্যন্ত বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটক থেকে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত এলাকায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াতকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। আশপাশের গলিগুলো থেকেও জামায়াতকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে, এর জবাবে পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। সংঘর্ষের জন্য পুলিশকে দায়ী করে ঢাকা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক সফিকুল ইসলাম মাসুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তাদের মিছিলে পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলা চালায়। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, জামায়াত নেতা-কর্মীরাই পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটায়। সংঘর্ষস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। ইটের আঘাতে আহত ছয়জন পুলিশ সদস্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। জামায়াত নেতা সফিকুল দাবি করেন, পুলিশ তাদের অন্তত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং পুলিশের লাঠিপেটায় আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। সংঘর্ষস্থলে থাকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক কামাল হোসেন তালুকদার অন্তত পাঁচটি মোটর সাইকেল পুড়তে দেখেছেন। এর মধ্যে দৈনিক বাংলা মোড়ে একটি, সিটি সেন্টারের সামনে একটি এবং জনতা ব্যাংকের সামনে তিনটি মোটর সাইকেলে আগুন দেয়া হয়। এছাড়া সিটি সেন্টারের কাছে একটি বিআরটিসি বাসে এবং আলিকো ভবনের সামনে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দেয় জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এই সংঘর্ষের বিষয়ে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার নূরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা পথচারীবেশে সড়কে অবস্থান নেয় এবং মিছিলের নামে পুলিশের ওপর হামলা চালায়।”
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বন্ধ এবং জামায়াতের নয়জন শীর্ষ নেতার মুক্তির দাবিতে সোমবার সারাদেশে জামায়াতের বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল।
পুলিশ কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম জানান, ঢাকার মতিঝিল ও পল্টন এলাকায় পুলিশের কড়া নজর থাকলেও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা আগেই বিভিন্ন অফিস, দোকান ও হোটেলে অবস্থান নেয়। বিকালে একযোগে বেরিয়ে আসে।