রাজশাহী প্রতিবেদক:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে রাবি প্রক্টর, সাংবাদিকসহ উভয় দলের অনত্মত অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছে৷ এদের মধ্যে ৫ জন গুলিবিদ্ধ৷ আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিত্সা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়ার পরে রামেকসহ নগরীর বিভিন্ন কিনিকে ভর্তি করা হয়েছে৷ গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রবিন্দ্র ভবনের সামনে থেকে সংঘর্ষ শুরম্ন হয়ে পুরো ক্যাম্পাসে তা ছড়িয়েছে৷ আধা ঘন্টা সংঘর্ষ চলার পরে শিবির ক্যাম্পাস থেকে বাইরে অবস্থান নিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের মধ্যে অবস্থান নেয়া সাধারণ শিৰাথর্ীদের জিম্মি করে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে৷ এ সময় ছাত্রলীগের নিজেদের দু’গ্রম্নপের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে৷ এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
সংশিস্নষ্ঠ সূত্রে জানাগেছে, মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র ভবনের সামনে ছাত্রশিবিরের ৩০/৩৫ নেতকর্মী অবস্থান নেয়৷ এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রবীন্দ্র ভবনের ভেতরে অবস্থান৷ শিবির নেতাকর্মীরা স্থান ত্যাগ করতে চাইলে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃৃত সহ সভাপতি তাকিম, তুহিন, মিঠু, জাকির, আমিন, নিয়ন, আতিক, সবুজ সওয়ারের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন ছাত্রলীগ কর্মী শিবির কর্মীদের ধাওয়া দেয়৷ এ সময় দৌড়ে শিবির কর্মীরা আগে থেকেই অবস্থান নেয়া অন্য গ্রম্নপের সাথে শহীদুলস্নাহর সামনে মিশে পাল্টা অবস্থান নেয়৷ এ সশয় উভয় গ্রম্নপের মাঝে ইট পাটকেল নিৰেপের ঘটনা ঘটে৷ এ সময় ছাত্রলীগের তুহিন, তাকিম আতিক প্রকাশ্যে শিবির কর্মীদের উদ্দেশ্যে গুলি ছুড়লে সংঘর্ষের তুমুল আকার ধারণ করে৷ এতে গুলিবিদ্ধরা হলেন, রাবি শাখা সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন ইয়াহইয়া, শিবিরকর্মী জাহাঙ্গীর, শরীফ, আরিফ এবং জহির ( ইসলামিক স্টাডিজ ৪র্থ বর্ষ)৷ অন্য আহতরা হলেন, বঙ্গবন্ধু হল শিবিরের সভাপতি মোবারক হোসেন বাবু, ইব্রাহীম হোসেন (ইসলামিক স্টাডিজ-৪র্থ বর্ষ), রবিউল ইসলাম (ভাষা ২য় বর্ষ), আল আমিন (ইসলামের ইতিহাস ২য় বর্ষ), ছাত্রলীগের আখেরম্নজ্জামান তাকিম, মামুন, তানিম, ইনকিলাবের রাবি রিপোর্টার ও প্রেসকাব সভাপতি আজিবুল হক পার্থসহ অনত্মত ৫০ জন আহত হয়েছে৷ আহতদের মধ্যে জহির, নবিউল ও আল আমিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়ে৷ এ ঘটনায় সাধারণ শিৰার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
অন্যদিকে ছাত্রলীগের হামলার সময় পুলিশ সহযোগীতা না করায় পুলিশের উপর চড়াও হয়ে উঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা৷ পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ভাংচুরে বাধা দিলে রাবি প্রক্টর চৌদুরী মোহাম্মাদ জাকারিয়াকে শারিরিক ভাবে লাঞ্ছিত কওে চাত্ররীগের নেতাকর্মীরা৷ লাঞ্ছিত হয়েছে প্রক্টর ভিসি ভবনে অবস্থান নিলে ছাত্র উপদেষ্টা গোলাম সাবি্বর ক্যাম্পাসে পরিবেশ শানত্ম করতে কাজ করেন৷
অপর দিকে, সংঘর্ষ শেষে শিবির কর্মীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করলে শিবিরমুক্ত ক্যাম্পাসে সাধারণ শিৰাথর্ীদের জিম্মি করে ত্রেিসর রাজত্ব কায়েম করে ছাত্রলীগ৷ ক্যাম্পাসে শিবিরকর্মীদের ঢুকানোর অভিযোগে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে বিৰোভ মিছিল করে ও ভিসির বাসভবনের গেট, প্রশাসন ভবন, জনসংযোগ দপ্তর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, দোকানপাট, ক্যাম্পাসের বাস এবং পুলিশের গাড়িতে ভাংচুর চালায় তারা৷ বিভিন্ন ভবনের ভেতওে শিবির অবস্থান করছে এমন ধারণায় অগ্রনী ব্যংক, রবীন্দ্র ভবন, শহীদুলস্নাহ ভবন ও মমতাজ উদ্দিন ভবনের ভেতওে তাকা সাধারণ শিৰাথর্ীদের ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগ৷ এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে৷ বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে৷
এদিকে বিভিন্ন ভবনে সাধারণ ছাত্রদের উপর হামলার সময় ছাত্রলীগের নিজেদের দু’গ্রম্নপের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে৷ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মুনে কর্মী রনি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমনকে গালিগালাজ করলে নোমান ও হিমুর নেতৃত্বে ১২/১৫ জন রনিকে ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ ভীন্ন মাত্রায় রম্নপ নেয়৷ পরে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের হসত্মৰেপে পরিবেশ শানত্ম হলে উভয় গ্রম্নপ একত্রিত হয়ে ক্যাম্পাসে বিৰোভ মিছিল ও সমাবশে করে৷ এ ঘটনার পরে পুলিশ বিভিন্ন মেসে অভিযান চালিয়ে অনত্মত ৫০ জন কে আটক করেছে৷
ছাত্রলীগের সেক্রেটারী আবু হোসাইন বিপু বলেন, শিবির প্রশাসনের মদদে ভর্তি পরীৰাকে বানচাল করার জন্য বহিরাগত ও খুনের আসামীদের নিয়ে অতির্কিত হামলা চালিয়েছে৷ আমরা এ ধরনের কর্মকান্ডের নিন্দা জানায়৷ প্রশাসনের কাছে হামলাকালীদের চিহ্নিত কওে শাসত্মির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি৷ রাবি শিবিরের সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন বলেন, শিবির নেতাকর্মরিা ক্যাম্পাসে শানত্মিপূর্ন অবস্থান নিয়ে চলে আসার পথে চাত্রলীগ কাপুরম্নষের মতো পেছন থেকে হামরা চালিয়েছে৷ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে গুলি করে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি চেষ্টা করেছে৷ এ শিবিরের ৫ নেতাকে গুলিবিদ্ধসহ অনত্মত ৫০ জনকে আহত করেছে৷ আমরা এই হামলার সুষ্ঠ বিচার চাই অন্যতায় ক্যাম্পাসের যেকোন পরিবেশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী থাকতে হবে৷
এ ব্যাপারে ছাত্র উপদেষ্টা গোলাম সাবি্বর সাত্তার তাপু বলেন, আমরা বড় একটি পরীৰা (এ্যাডমিশন টেস্ট) সামনে থাকার কারণে দুই সংগঠনের ছাত্রনেতাদের সাথে কথা বলব৷ প্রয়োজনে উভয় নেতার সাথে বসতে পারি৷ তবে আমরা যে কোন মুল্যে পরীৰা সম্পন্ন করতে চাই৷ এ জন্য ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে৷
যোগাযোগ করা হলে নগর পুলিশে অতিরিক্ত কমিশনার মনিরম্নজ্জামান বলেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়কে যারা অমানত্ম করতে চাই তাদের বরদাশত করতে দেয়া হবে৷ অতিরিক্ত এক কোম্পানি (১’শ জন) পুরিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
আপলোড,২ অক্টোবর-১২,প্রতিবেদক,রাজশাহী,সম্পাদনা,আলীরাজ/আরিফ