রুপষীবাংলা, ঢাকা ২০ অক্টোবর :
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা বিভাগ ও রাজশাহীর মধ্যকার খেলা বাদ দিলে জাতীয় লিগের প্রথম দিনটি ছিলো ব্যাটসম্যানদের। বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে দুটি শতক হয়েছে। জাতীয় দলের ওপেনার ও চিটাগংয়ের অধিনায়ক তামিম ইকবাল ১৭৬ রানে অপরাজিত আছেন। তাদের আরেক ব্যাটসম্যান মমিনুল হক ১২০ রানের ইনিংস নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেছেন। একদিনে এবং এক ইনিংসে দুটি শতক জাতীয় লিগে খুব বেশি হয় না। ১৪তম আসরের উদ্বোধনী দিনে তা হয়েছে।
তামিম পুরো দিন ক্রিজে থেকে ২৫৭টি বল মোকাবেলা করে ১৭টি চার ও তিনটি ছয়ের মারে অনবদ্য ইনিংসটি সাজিয়েছেন। জাতীয় লিগে এটি তার তৃতীয় শতক। ২০০৭ সালে শেষবার জাতীয় লিগে খেলেছেন তামিম। তামিমের তুলনায় মনিনুল হক একটু চালিয়ে খেলেছেন। ১৯৮ বল মোকাবেলা করে ১২টি চার ও একটি ছয় দিয়ে জাতীয় লিগে নিজের প্রথম শতক করেন (১২০ রান) তিনি।
তৃতীয় উইকেটে তারা দুজন যোগ করেছেন ২৬৮ রান। এই দুই ব্যাটসম্যানের দুর্দান্ত দুটি শতকে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে চিটাগং ৯০ ওভার খেলে দুই উইকেট তুলেছে ৩৪৫ রান। আর পাঁচ রান করলেই ব্যাটিং বোনাস হিসেবে এক পয়েন্ট পাবে চিটাগং। নাফিস ইকবালকে নিয়ে ব্যাটিং ওপেন করতে গিয়েছিলেন তামিম। দলীয় পাঁচ রানে বড় ভাইকে হারান জাতীয় দলের ওপেনার। মৌসুমের প্রথম ইনিংসে রানের খাতা খোলা হয়নি নাফিসের। পরের ব্যাটসম্যান নাজিমউদ্দিন ৩৩ রান করে আশরাফুলের শিকার হয়েছেন।
জাতীয় লিগে এতটা পরিকল্পিত ইনিংস আগে কখনও খেলেননি তামিম। যেভাবে চেয়েছেন ঠিক ঠিক তাই হয়েছে। তামিমের মুখেই ইনিংসের বর্ণনা শোনেন, ‘আমি খুশি একটা ভালো ইনিংস খেলতে পেরেছি। পরিকল্পনা ছিলো পুরো দিন ব্যাটিং করবো এবং শতক করবো। জীবনে প্রথমবারের মতো জাতীয় লিগে পুরো দিন ব্যাটিং করেছি।’
শতককে দ্বিশতকে নিয়ে যাওয়ার একটা পরিকল্পনা তামিম করছেন, ‘অবশ্যই আমার চেষ্টা থাকবে এই রানটাকে ‘ডাবল’ করার। কালকে (রোববার) প্রথম এক ঘণ্টা পার করতে পারলে আশা করি সেটা হয়ে যাবে।’এমন একটি উইকেটই আশা করছিলেন তামিম, ‘ব্যাটিংয়ের জন্য পিচ খুব ভালো ছিলো। সত্যি, কথা বলতে বোলারদের জন্য পিচে কোন সুবিধা ছিলো না। তাদের বোলাররা যথেষ্ট ভালো বল করেছে। এছাড়া আমরাও পরিকল্পনা মতো খেলেছি। ফলে ভালো একটা স্কোর হয়েছে।’
চিটাগংয়ের অধিনায়ক দলের ইনিংসটাকে যতটা সম্ভব টেনে নিয়ে যেতে চান। তার মানে রোববার ঝটপট কিছু রান তুলে তিনি ইনিংস ঘোষণা করছেন না, ‘এই ইনিংসটাকে ‘ম্যাচ টোটাল’ করতে পারলে আমাদের জন্য ভালো হবে। কারণ তাদের ব্যাটসম্যানরা আমাদের বোলারদের কাজটা কঠিন করে তুলতে পারে।’মমিনুল তার ইনিংস সম্পর্কে বললেন, ‘জাতীয় লিগে আমার প্রথম শতক, এজন্য ভালো লাগছে। উইকেট ভালো ছিলো। তামিম ভাই এবং আমি পরিকল্পনা মতো খেলেছি।’
ঢাকা মেট্রোর অধিনায়ক আশরাফুল তার ভান্ডারে থাকা সব ধরণের বোলার ব্যবহার করেছেন। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। ইলিয়াস সানির স্পিন বলেও হাত খুলে ব্যাট করেছেন তামিম-মমিনুল। আশরাফুল তাদের বোলিং ব্যর্থতার চেয়েও প্রতিপক্ষ দুই ব্যাটসম্যানকে কৃতিত্ব দিয়েছেন, ‘আসলে প্রথম দিন উইকেট খুব ভালো ছিলো। এছাড়া তামিম এবং মমিনুল খুব ভালো ব্যাট করেছে। এত ভালো খেললে বোলারদের কিছু করার থাকে না। তাদের আউট কারার জন্য সব ভাবে চেষ্টা করে দেখেছি। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। তবে কালকে আরেকটি দিন এবং নতুন ভাবে খেলতে যাব। প্রথম ঘণ্টাতে যদি তামিম এবং মমিনুলকে আউট করতে পারি তাহলে হয়তো ভিন্ন গেম হবে। আর তা না করতে পারলে আমাদের কাজটি কঠিন হয়ে যাবে।’
নিউজরুম