দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিরাজ করছে তীব্র শিক্ষক সঙ্কট। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানসম্মত শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। মূলত বিপুলসংখ্যক শিক্ষকের পদ শূন্য থাকা এবং কর্মরত শিক্ষকদের উলে¬খযোগ্য অংশই কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকে কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রমে বেহাল দশা সৃষ্টি হয়েছে। বিঘিœত হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমও। দেশে ৩১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৯টিরই ১৬শ’র বেশি শিক্ষক বর্তমানে দেশেই নেই। এসব শিক্ষকরা উচ্চশিক্ষার নামে বিদেশ রয়েছেন। এছাড়া আরও ২ হাজারেরও বেশি শিক্ষক দেশের ভেতরে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন চাকরি নিয়ে ব্যস্ত। তাছাড়া এনজিও ব্যবসা, বিদেশী সংস্থায় পরামর্শকসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন কাজ করছেন আরও সহস্রাধিক শিক্ষক। এর বাইরে ৪৫৫ জন শিক্ষক প্রেষণে বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। আর শিক্ষাছুটি নিয়ে ‘লাপাত্তা’ হয়ে আছেন আরও ৪৪০ জন। সব মিলিয়ে ৩১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ হাজার ৭৩৫ শিক্ষকের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষক কোন না কোনভাবে মূল শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছুট’ প্রবণতার কারণে দেশের সার্বিক উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য নানা অজুহাত বা পন্থায় শিক্ষকদের কর্মস্থলে অনুপস্থিতিই অন্যতম কারণ। কর্মস্থলে অনুপস্থিতির ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষা, অর্জিত, ঐচ্ছিকসহ বিভিন্ন ধরনের ছুটির অজুহাত ব্যবহার করছে। তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সময় দেয়ার চেয়ে বরং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো, এনজিও বা বিদেশী প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক, অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষক, নিয়োগ কমিটির সদস্য হওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের ‘খ্যাপ-বাণিজ্যে’ই বেশি আগ্রহী। যা সত্যিই দুঃখজনক।