রুপসীবাংলা ঢাকা ১৯ অক্টোবর :
সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতে সেনগুপ্তের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদারের বিশ্বস্থ গাড়িচালক আজম খান কেনোই বা হঠাৎ করে পিলখানায় টাকার গাড়ি ঢুকিয়ে দিয়েছেন? প্রকৃতপক্ষে কি ঘটেছিল ৯ এপ্রিল মধ্যরাতে? তবে অভিযোগ ওঠা রেলের নিয়োগ বাণিজ্যের টাকা মন্ত্রী সুরঞ্জিতের বাসায় যাচ্ছিলো? এসব উত্তর খুঁজতে অবশেষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তলব করেছে বহুল আলোচিত সেই গাড়িচালক আলী আজম খানকে।
রেল কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক রাশেদুর রেজা ২১ অক্টোবর রোববার সকাল দশটায় সেগুনবাগিচাস্থ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আজম খানকে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চাঁদপুরের মতলবে তার গ্রামের বাড়ীতে এ নোটিসটি পাঠানো হয়। ঘটনার পর থেকে গাড়িচালক পলাতক রয়েছে। গাড়িচালক আজমকে পাঠানো নোটিসে উল্লেখ করা হয়, “ তদন্ত ১/৬৫-২০১২ অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধান এবং রমনা থানার মামলা নং ৩৩(৩) ১২, কোতোয়ালি সিএমপি চট্টগ্রাম থানায় মামলা নং ৩১.৩২.৩৩.৩৪.৩৫.৩৬ তারিখ ১৩/০৯/১২ সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনার বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজন মনে করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।“
বৃহস্পতিবাও আজমের ভাই শাহ আলম ও দুদকের নোটিস পাওয়ার বিষটি নিশ্চিত করেছেন। যোগাযোগ করা হলে শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, “আমার ভাই অপরাধী নয়। সে সামান্য গাড়ি চালক অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকারও সুযোগ নেই।“আজমের ভাই আরো বলেন, “তার জীবনের নিরাপত্তা এখন বড় বিষয়। সরকার নিরাপত্তা দিতে পারলে দুদকের ডাকে সাড়া না দেওয়ার কোনো কারণ নেই।“তার অবস্থান জানতে চাইলে শাহ আলম বলেন, সে বর্তমানে কোথায় আছে আমরা তা জানি না।
চলতি বছরের ১০ মে আজম খানকে দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানের চিঠি দিলেও আজম খান হাজির হননি। বরং বেসরকারি টিভি চ্যানেলে অজ্ঞাত স্থান থেকে সাক্ষাৎকার দেন আজম খান দেন। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, সেদিন রাতে টাকার গাড়ি মন্ত্রী সুরঞ্জিতের বাসায় যাচ্ছিলো। তার এ বক্তব্য ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলে সুরঞ্জিত আজমের এ বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে বক্তব্য কেউ প্রমাণ করতে পারবে না।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৯ এপ্রিল রাতে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের ফটকে সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের এপিএস ফারুকের গাড়িতে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়। পূর্বাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধা এবং রেল পুলিশের কমান্ড্যান্ট এনামুল হকও ওই গাড়িতে ছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, ওই অর্থ রেলের বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য ঘুষ হিসেবে নেওয়া হয়েছিল। এই টাকার পরিমাণ ছিল ৭০ লাখ টাকা। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনার পর ইউসুফ আলী মৃধা ও এনামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। চাকরিচ্যুত হন ওমর ফারুক। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করে রেল কর্তৃপক্ষ।
রেলের তদন্ত প্রতিবেদনে অবশেষে সুরঞ্জিতকে ‘নির্দোষ’ উল্লেখ করা হয়। রেল কেলেঙ্কারির বিষয়ে দুদক সুরঞ্জিতকে এ পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদও করেনি।
নিউজরুম