হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ৫দিনের রিমান্ডে

0
189
Print Friendly, PDF & Email

রুপসীবাংলা ঢাকা ১৯অক্টোবর :
গ্রেফতারকৃত হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার বিকেলে দুদক তাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে এ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে জেসমিনকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন জানায় দুদক। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা শাহরিয়ার খানের আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জেসমিনের রিমান্ড হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী। এর আগে দুপুরে জেসমিন ইসলামকে রমনা থানা থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এনে সাড়ে ৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বেলা সাড়ে ১২টায় তার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা এবং দুদকের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী বলেন, গ্রেফতারের পর এটি ছিল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ। তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আদালত রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জেসমিনের রিমান্ড শুরু হবে।
সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে ঋণ কেলেঙ্কারির মামলায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মানিকগঞ্জ সার্কিট হাউজের পেছনে বেওথা রোডের ১০ নম্বর বাসা থেকে তাকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৪ ও র্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি যৌথ দল। বাসাটি জেসমিনের এক খালাতো বোনের স্বামীর বলে জানা গেছে। জেসমিন একই মামলায় এর আগে গ্রেফতারকৃত হলর্মাক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় র‌্যাব সদস্যরা তাকে রমনা থানায় হস্তান্তর করে। পরে তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

এদিকে, আটক করার পর তাকে মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় এনে রাত সাড়ে ১০টায় মিরপুর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে র‌্যাব-৪। এসময় র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ ইবনে জায়েদ জানান, জেসমিন ইসলাম র্দীঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। তিনি আরো জানান, গত ১০ অক্টোবর মিরপুরের বাসা থেকে মানিকগঞ্জে গিয়ে আত্মগোপন করেন জেসমিন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়। উল্লেখ্য, বহুল আলোচিত হলর্মাক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামকে আসামি করে মোট ২৭ জনের বিরুদ্ধে গত ৪ অক্টোবর ১১টি মামলা করে দুদক। আসামিদের মধ্যে হলমার্কের ৭ জন এবং সোনালী ব্যাংকের ২০ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। জেসমিন ইসলামের বিরুদ্ধে ১১টি মামলায় ১৫ কোটি ৬৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় হলমার্কের এমডি তানভীর মাহমুদ, জেনারেল ম্যানেজার তুষার আহমেদ এবং সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম কেএম আজিজুর রহমান (রূপসী বাংলা শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক) এরই মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন।
রাষ্ট্রয়াত্ত সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে ভুয়া ঋণপত্র বা এলসির মাধ্যমে হলমার্কের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের ৬ সদস্যের অনুসন্ধান দলের সদস্যরা বাদী হয়ে রমনা মডলে থানায় এসব মামলা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, পরস্পরের যোগসাজশ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থের অপব্যবহার ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলাগুলো করেছেন দুদকের অনুসন্ধান দলের সদস্য জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী, উপপরিচালক এসএমএম আখতার হামিদ ভূঞা, সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান, নাজমুস সাদাত, উপসহকারী পরিচালক মো. মজিবুর রহমান ও মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। মোট ১১টি মামলায় হলর্মাক গ্রুপ ফান্ডে দায় হিসেবে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৭ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানান অনুসন্ধান দলের প্রধান মীর জয়নুল আবদীন শিবলী।
রূপসী বাংলা হোটেল শাখা থেকে হলর্মাক মোট দুই হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। এর মধ্যে স্বীকৃত বিলের বিপরীতে পরিশোধিত (ফান্ডে) অর্থ হচ্ছে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৭ টাকা। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে ওই ফান্ডের দায় লোপাটের সঙ্গে যাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে তাদের সবার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

নিউজরুম

শেয়ার করুন