রূপসীবাংলা ঝিনাইদহ, ১৭ অক্টোবর :
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে আবারো প্রাণ গেল হতভাগ্য এক বাংলাদেশী যুবকের। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্রীনাথপুর সীমান্তে বুধবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হন আরো পাঁচজন। নিহতের মো. রবিউল ইসলাম (৩০)।
তিনি মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় মাঠপাড়া গ্রামের তোরাব আলীর ছেলে। নিহতের লাশ বিএসএফ নিয়ে গেছে। বিএসএফ’র গুলিতে আহতরা হলেন- মহেশপুর উপজেলার শ্রীনাথপুর গ্রামের ওহিদুল ইসলামের ছেলে রাজু আহম্মেদ (২৫), একই গ্রামের আব্দুল হোসেন (২৭) ও গৌরী হাওলদারের ছেলে শংকর হাওলদার, শ্যামকুড় গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে ইমরান খান (২৬) এবং পদ্মপুকুর গ্রামের সৈয়দ আলীর ছেলে মহর আলী (২৮)। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ রাজু আহম্মেদ, ইমরান খান ও মহর আলীকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’র (বিজিব) মহেশপুর সীমান্তের শ্যামকুড় ক্যাম্পের সুবেদার আমির খসরু বার্তা২৪ ডটনেটকে জানান, শ্রীনাথপুর সীমান্তের ৬১/৯ আর মেইন পিলারের ১৮ সাব পিলার কাছ দিয়ে কয়েকজন বাংলাদেশী ভারতে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় ভারতের ফতেপুর ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ জোয়ানরা গুলি চালায়।
এতে রবিউল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশী নিহত ও পাঁচজন আহত হন। আহতদের মধ্যে তিনজনকে যশোর হাসপাতাল ও দুইজনকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। সুবেদার আমির খসরু আরো জানান, বুধবার দুপুরে বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে পতাকা বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। বিএসএফকে চিঠি দিয়ে লাশ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ঢাকা সফররত ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব আর কে সিং সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটছে না; এগুলো মৃত্যু। চলতি বছর সীমান্তে ছয়টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১১। কিন্তু দেড় বছরে সীমান্তে চারশ’রও বেশি বিএসএফ সদস্য চোরাচালানিদের হামলায় আহত হয়েছে। এদের মধ্যে দু’জন মারাও গেছে। তবে প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন অধিকার’র হিসাব অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফ ২৮ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে।
সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি মাসেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও ও কুষ্টিয়া সীমান্তে কমপক্ষে ছয় জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে বিএসএফ। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ’র সম্মেলনে বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার অঙ্গীকার করলেও আগের তুলনা সীমান্ত হত্যাকাণ্ড আরো বেড়ে গেছে। বিশিষ্ট নাগরিকরা সীমান্তের এই হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
নিউজরুম