এসএম রাজু আহমেদ, সিংড়া :
নাটোরের সিংড়ায় বিএনপিতে চলছে নয়া মেরম্নকরণ। ত্রি-ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে নেতা কর্মী ও সমর্থকরা। জনপ্রিয় পৌর মেয়র শামিম আল রাজিকে ঠেকাতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্ভন করছেন উপজেলা বিএনপির নেতারা। সাবেক এক সংসদ সদস্যর কর্মী সমর্থকদের আচরনে ও ক্ষুদ্ধ তৃনমূল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তছাড়া দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে মেয়র মরিয়া হয়ে উঠেছেন অভিযোগ করেছেন সিনিয়র নেতারা। তবে এটাকে তিনি কৌশল হিসেবে নিয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, পৌর মেয়র শামিম,উপজেলা বিএনপিকে মাইনাস করে তার সমর্থকরা আলাদা ভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করে। অথচ সরকার বিরোধী আন্দোলনকে চাঙ্গা করার জন্য নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা চায় ঐক্যবদ্ধ বিএনপি। মূলত সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডঃ আবুল কালাম আজাদ, পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র অধ্যাঃ শামিম আল রাজিকে ঘিরে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতি লক্ষনীয়। তবে আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে ও কয়েকজন প্রচার প্রচারনা ও গনসংযোগ ব্যসত্ম রয়েছেন। তাদের ঘিরে ও নেতা-কর্মীদের উৎসাহের কমতি নেই। আসামী সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা ততই বাড়ছে। জোড় প্রচারনা চালাচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ধানের শীষ কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাঃ নজরম্নল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক সিবিএ নেতা মোঃ আলাউদ্দিন। তবে আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন যেই পাবে তার পক্ষেই তৃনমূল নেতা-কর্মীরা কাজ করবে। সরেজমিনে বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে বেড়িয়ে এসেছে এসব তথ্য। সিনিয়র নেতারা ও মনে করেন মনোনয়ন যেই পাবে তার পক্ষে নেতাকর্মীরা একযোগে কাজ করবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা বলেন, গত সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনে সিংড়া পৌর মেয়র শামিম আল রাজি দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করায় বিএনপির ভরাডুবি হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। মূলতঃ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডঃ আবুল কালাম আজাদের রয়েছে শক্তিশালী বলয়। তবে নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, বিএনপির কেন্দীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী গোলাম মোর্শেদ সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে নিজের আখের গোছাতে ব্যসত্ম ছিলেন।
আর একারণেই অনেকে তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। অপরদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দলকে সূসংগঠিত ও সংগঠনকে চাঙ্গা করতে সচেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন এ্যাডঃ আবুল কালাম আজাদ। এদিকে পৌর মেয়র শামিম আল রাজির রাজনীতিতে রয়েছে আলাদা বলয়। সিনিয়র বিএনপি ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার রয়েছে ঘনিষ্ট সম্পর্ক। বিশেষ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচী, বিক্ষোভ মিছিল পৃথকভাবে করায় উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা সহজভাবে মেনে নিতে পারছেন না। ত্রিধারায় সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সুসংগঠিত করার প্রক্রিয়ায় বর্তমানে একদিকে যেমন উজ্বীবিত বিএনপি। শামিম বিরোধী নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, পৌর মেয়র শামিম আল রাজি দলকে বিভাজনে ব্যসত্ম। নানা প্রলোভন দিয়ে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দলে ভেড়ানোর কৌশল নিয়েছে তিনি। সরকার বিরোধী আন্দোলনে একদিকে নেতা-কর্মীরা সক্রিয়। অপর দিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এবার সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় ১০ জন প্রার্থীর নাম শো্না যাচ্ছে, তারা হলেন- জাতীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সংসদ ও সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব কাজী গোলাম মোর্শেদ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ধানের শীষ কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাঃ নজরম্নল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আনোয়ারম্নল ইসলাম আনু, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলার রহমান বাচ্চু, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক সিবিএ নেতা মোঃ আলাউদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের এ্যাডভোকেট ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজম্মে মহাসচিব ইউসূফ আলী, সেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবুল হোসেন, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও ঢাকাস্থ সিংড়া কল্যান সমিতির সাংগঠনিক মালেক রানা, গবেষক খাইরম্নল বাসার হ্যাপি ও সিংড়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র শামিম আল রাজি।
সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ বলেন, ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করে আসছি। মানুষের সেবা ও ভালোবাসাই আমার জীবনের সার্থকতা। আজীবন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলকে সুসংগঠিত ও নেতাকর্মীদের পাশে থেকে সেবা করে যেতে চাই। উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড আবুল কালাম আজাদ দলে বিভাজনের জন্য পৌর মেয়রকে দায়ী করে বলেন, সে দলে বিভাজনে ব্যসত্ম। এ বিষয়টি জেলা বিএনপি ও অবগত আছে। তিনি আর ও বলেন, তার কর্মকান্ডে দলের অনেকে ক্ষুদ্ধ। উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, বিভাজন থাকায় বিগত উপজেলা ও ইউপি নির্বাচনে পরাজয় ঘটেছে। উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ডাঃ নজরম্নল ইসলাম বলেন, আমরা দলের ভালো চাই, তবে দলের মধ্যে একটি চক্র আছে যারা বিভাজনে ব্যসত্ম। তিনি ও পৌর মেয়রকে দায়ী করে বলেন, আওয়ামীলীগের সঙ্গে আতাত করে তিনি নিজ স্বার্থ হাসিল করছেন। পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু বলেন, দলের মধ্যে আমত্মরিকতা নেই এবং সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। পৌর বিএনপির সভাপতি ও মেয়র শামিম আল রাজি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,প্রশ্নই আসে না, আমি দলকে সুসংগঠিত করার জন্য কাজ করছি, আলাদা ভাবে কর্মসুচির বিষয়ে তিনি বলেন, উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির কার্যক্রম আলাদা। আর নির্বাচন সামনে রেখে যে যার অবস্থানে কাজ করবে, এতে কোন দোষ আছে বলে আমি মনে করি না। তবে রাজনৈতিক বিশেস্নষক মনে করেন, আওয়ামীলীগের প্রার্থী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে পালস্না দিতে হলে স্থানীয় প্রার্থী দরকার। নইলে আগামী সংসদ নির্বাচনেও এ আসনটি হারাতে হবে বিএনপিকে।
নিউজ প্রতিবেদক, সম্পাদনা আলীরাজ/ আরিফ