ঝড়ে লন্ডভন্ড ভোলা নিহত ১০, নিখোঁজ শত শত

0
487
Print Friendly, PDF & Email

রূপসীবাংলা ভোলা, ১১ অক্টোবর :
বুধবার মধ্যরাতে আকস্মিক ঝড়ে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ওই ঝড়ে ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং কয়েক শত জেলে নিখোঁজ রয়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন ১০ জনের মৃত্যুর নিশ্চিত করেছেন।
ভোলার মনপুরায় একটি ট্রলার ডুবে খোরশেদ আলমসহ ১০ জেলের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড়কবলিত লোকজন জানান, আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস না থাকায় শত শত ট্রলারের জেলেরা মেঘনা নদীতে নির্বিঘ্নে মাছ ধরার কাজ করছিলো।
গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড় লন্ডভন্ড হয়ে যায় পুরো উপকূলীয় অঞ্চল। নোয়াখালীর হাতিয়া ও সুবর্ণচরে নয়জন ও ভোলার মনপুরা, চরফ্যাশন এলাকায় পাঁচজন মারা গেছে। মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ার ভেঙ্গে পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছেন। নোয়াখালীর হাতিয়া ও সুবর্ণচর উপজেলায় নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে বুড়িরচর ইউনিয়নের সীমা আক্তার (১২) ও তার ভাই মামুন উদ্দিন (৮), নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের রাজেশবরী দাস (৪৫) ও সুবর্ণচর উপজেলার মহম্মদপুর ইউনিয়নের চরকনক গ্রামের নুরজাহান (৫৫) ও তার মেয়ে শারমিন আক্তার (১০)। হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের মেঘনা নদী থেকে ৩০-৪০টি মাছধরা ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে।
প্রতিটি ট্রলারে ১০ থেকে ১২ জন মাঝি রয়েছে। হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহেদুর রহমান ও সুবর্ণচর ইউএনও খালিদ মেহেদী হাসান নিজ নিজ এলাকার তথ্যগুলো নিশ্চিত করে জানান, ঘূণিঝড়ে দুই উপজেলার দুই সহস্রাধিক বাড়ি-ঘর বিধ্বসত্ম হয়েছে। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, হাজার হাজার গাছ উপড়ে পড়ায় উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। হাতিয়া থেকে মেঘনায় শত শত ট্রলার নিয়ে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা কূলে ফিরে আসেনি। এর মধ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। বিভিন্ন জায়গা থেকে নিহত ও নিখোঁজদের খবর আসছে। জেলে পরিবার গুলোতে চলছে শোকের মাতম। একদিকে তাদের বসত বাড়ি ধ্বংস হয়েছে, অন্যদিকে মাছ শিকারে ব্যসত্ম হাজার হাজার জেলে নিখোঁজ রয়েছে। চরফ্যাশন ও মনপুরা নিহত পাঁচজনের মধ্যে মনপুরার জেলে শাহে আলম (৩০) ও আবদুল খালেক (৩৫) ও চরফ্যাশনের আমেনা বেগম (৩২)। অন্য দুইজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এছাড়া বেলায়েত, জসিম, নীরব, মালেক, হেজু, খালেক, জলিল ও খোরশেদ নিখোঁজ রয়েছে। মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নরেশ কর্মকার জানান, মনপুরায় নিহত তিনজনের মধ্যে মেঘনা নদীর মনপুরার হাজির হাট এলাকা থেকে শাহে আলম ও দাসের হাট এলাকা থেকে আবদুল খালেকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘরচাপায় অপরজনের মৃত্যু হয়েছে। চরফ্যাশনের ঢালচর ইউপি চেয়ারম্যান কালাম পাটোয়ারী জানান, রাত দেড়টার দিকে মনপুরা ও চরফ্যাশনে ঝড় শুরু হয়। ভোর পর্যমত্ম থেমে থেমে বয়ে যাওয়া প্রচন্ড ঝড়ে চরফ্যাশনের চর কুকরি-মুকরি, ঢালচর, চর পাতিলা ও মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ও দাসেরহাটসহ বেশ কিছু এলাকার আট শতাধিক কাঁচা-পাকা ঘড়-বাড়ি বিধ্বসত্ম হয়। ঢালচরে ঘরচাপা পড়ে আমেনা বেগম নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। এদিকে, ভোরের দিকে মনপুরা-তজুমদ্দিন রুটের সরকারি সি ট্রাক ও সারবাহী ১টি ট্রলার ডুবে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া চট্টগ্রামের সনদ্বীপ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড়ে দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহত দুজনই নারী। তারা হলেন, সমেত্মাষপুর ইউনিয়নের গাছুয়া ইউনিয়নের অনোয়ারা বেগম (৩০) এবং খোদেজা বেগম (৬৫)।
নিউজরুম

শেয়ার করুন