অর্থ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে টানাপড়েন

0
233
Print Friendly, PDF & Email

রূপসীবাংলা ঢাকা, ১০ অক্টোবর:
শিক্ষা মন্ত্র্রণালয় বলছে এমপিওভুক্তি প্রয়োজন, অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে টাকা নেই। মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠিয়ে অনুমোদনের অপেক্ষা করছে অধিদফতর। এদিকে আবেদন করে মাসের পর মাস শিক্ষাভবনে ঘুরছেন শিক্ষকরা। কিন্তু সমাধান মিলছে না কারোরই। এভাবে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি নিয়ে চলছে টানাপড়েন আর টালবাহানা।
এমপিও বন্টনকারী প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক ও উচশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘গত সেপেম্বর মাসের শুরুর দিকে মাউশির পক্ষ থেকে চাহিদা অনুযায়ী সব তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
কিন্তু মন্ত্রণালয় এখনো কোনো সিদ্ধামত্ম জানায়নি।’ জানা গেছে, এমপিও কার্যক্রম নিয়ে খোদ মন্ত্রণালয় সিদ্ধামত্মহীনতায় ভুগছে। শূন্য পদে ইনডেক্সধারীসহ (বিএড উত্তীর্ণ) সবাইকে এমপিও দিবে, নাকি শুধু ইনড্রেধারীদের এমপিও দিবে, মন্ত্রণালয় এখনো সিদ্ধামত্ম নিতে পারেনি। তবে বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের হাতে যে টাকা বরাদ্দ রয়েছে তা দিয়ে উভয় ক্যাটাগরির শিক্ষকদের এমপিও দেয়া যেতে পারে বলে কেউ কেউ বলছেন। কিন্তু সিদ্ধামত্ম চূড়ামত্ম করতে না পারলেও মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি বলা হচ্ছে বরাদ্দ কম। সবাইকে এর আওতায় নাও আনা যেতে পারে। মন্ত্রণালয়ের এ রকম কালক্ষেপণে আটকে আছে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রায় ৭৩ হাজার শিক্ষকের ভাগ্য।
এ প্রসঙ্গে মাউশি’র একজন কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আর্থিক সংকট না থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে মন্ত্রণালয় থেকে টাকা ছাড় হচ্ছে না। আমাদের কিছুই করার নেই।’ মাউশি’র উপ-পরিচালক মো. মেজবাহউদ্দিন সরকার জানিয়েছেন, শূন্যপদে এমপিও, ইনড্রেধারী শিক্ষকদের এমপিও, টাইম স্কেল, উচতর শিক্ষা স্কেল, অভিজ্ঞতা স্কেল ও সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি, এই ছয় ধরনের আর্থিক সুবিধা সম্বলিত প্রসত্মাব মাউশি থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসার ৭৩ হাজার ৬৮ জন শিক্ষক ও কর্মচারীকে আপাতত ওই সুবিধার অর্ত্মভুক্ত করার প্রসাত্মব করা হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে সর্বমোট ১৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। মোট শিক্ষকের মধ্যে স্কুলের ৪৪ হাজার ৫৩৮ জন, কলেজের ১০ হাজার ৮৩০ জন আর মাদ্রাসা শাখার ১৭ হাজার ৭শ’ জন রয়েছেন। এদের মধ্যেই দু’ধরনের শিক্ষক রয়েছেন। ইতোমধ্যে আবেদনকারী হিসেবে স্কুলের আছেন ১৯ হাজার ১৩৮ জন, কলেজের পাঁচ হাজার ১২১ জন আর মাদ্রাসার ৯ হাজার ৮৮০ জন। এরা সবাই চলতি বছরের আগস্ট পর্যমত্ম আবেদনকারী। এর বাইরে সেপেম্বর থেকে আগামী মে পর্যমত্ম শূন্যপদে নিয়োগপ্রাপ্ত বা ইনডেক্সধারী এমপিওপ্রার্থী, টাইম স্কেল, উচতর শিক্ষা স্কেল, অভিজ্ঞতা স্কেল ও সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়ে আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন এমন শিক্ষক হিসেবে স্কুলে ২৫ হাজার চারশ’, কলেজে পাঁচ হাজার ৭০৯ জন আর মাদ্রাসায় সাত হাজার ৮২০ জন রয়েছেন। অর্থাৎ এই ৩৯ হাজার শিক্ষক নতুন করে আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের মধ্যে কেবল মাদ্রাসায় একশ’ জনকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়ার পরিকলনা রয়েছে। অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘শিক্ষকদের এসব আর্থিক সুবিধা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে একাধিক সভা হয়েছে। সেখানে এমপিওবঞ্চিত শিক্ষকদের সুবিধা পুনরায় চালুসহ আরো কয়েকটি বিষয় পর্যালোচনা করা হয়েছে। আমরা সকল বিষয়ে পর্যালোচনা করে প্রসত্মাব দিয়েছি। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সিদ্ধামত্ম দেয়া হচ্ছে না। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধামত্ম সাপেক্ষে অধিদফতর কাজ শুরু করতে পারবে।’
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রসত্মাবিত এসব শিক্ষকের পেছনে সর্বমোট ১৭৯ কোটি ৪৬ লাখ ৩১ হাজার ৯৬৯ টাকা বন্টন করতে হবে। এর মধ্যে আগস্ট পর্যমত্ম আবেদনকারী শিক্ষকদের জন্য মোট ব্যয় হবে ১১৪ কোটি ৭৩ লাখ ১২ হাজার ৮৪২ টাকা আর সেপেম্বর থেকে আগামী মে পর্যপ্ত আবেদনকারীদের পেছনে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে বাকি ৬৪ কোটি ৭৩ লাখ ১৯ হাজার ১২৭ কোটি টাকা। পৃথক হিসেবে স্কুল শাখায় উভয় ধরনের শিক্ষকদের পেছনে ব্যয় হবে ৮৫ কোটি ৭৫ লাখ ৪৪ হাজার ৭৯০ টাকা, কলেজ শাখায় ৪২ কোটি ৫৩ হাজার ৪২ লাখ ১৭৯ টাকা, মাদ্রাসা শাখায় ৫১ কোটি ১৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। শিক্ষকদের এমপিও প্রসত্মাব সম্বলিত ফাইলটি গত সপ্তাহে অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো উত্তর আসেনি। উলেস্নখ্য, ২০১১ সালের জুন মাস থেকে শূন্য পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ও ইনড্রেধারী শিক্ষকদের এমপিও এবং অন্যান্য সুবিধা বন্ধ রয়েছে।
নিউজরুম

শেয়ার করুন