রূপসীবাংলা ঢাকা, ০৯ অক্টোবর :
হলমার্কের এমডি তানভির মাহমুদকে ২৯ ও জিএম তুষার আহমেদকে ২৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। সোমবার কড়া নিরাপত্তায় তাদের সিএমএম আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। পল্ববী থানার অস্ত্র মামলা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রমনা থানায় পৃথক ১১টি মামলার জন্য রিমান্ড আবেদন করলে আদালত এই রিমান্ড দেন। দেশের ইতিহাসে একটানা ২৯ দিনের রিমান্ডে আর কাউকে নেয়া হয়নি। রিমান্ডে নিয়েই তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।
দুদকসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে তানভির মুখ খুলতে শুরু করেছে। জানা গেছে, ইতোমধ্যেই সোনালী ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় কয়েকজন রাঘববোয়ালের নামও বলেছেন তিনি। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঋণ জালিয়াতদের ওপরও চলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি। তারা যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে এজন্য বিমানবন্দর ও ইমিগ্রেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে একটি তালিকাও পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য পলাতক আসামিদের ধরার জন্য চেষ্টা চলছে। র্যাব ও দুদকের বিশেষ টিম তাদের ধরতে তৎপরতা চালাচ্ছে।
সোমবার দুপুর একটার দিকে তানভির ও তুষারকে রমনা মডেল থানা থেকে দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে নেয়া হয়। পরে সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন দুদকের তদমত্ম সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তারা। বিকেল ৩টা পর্যমত্ম প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক কার্যালয় থেকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির প্রধান দুই আসামি তানভির ও তুষারকে আদালতে নেয়া হয়। তাদের দুদকের সিনিয়র উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নাল আবেদিন শিবলীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যর তদমত্ম টিম জিজ্ঞাসাবাদ করে। দুদক সূত্র জানায়, হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের উচপর্যায়ের লোকজন পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন তুষার। ইতোপূর্বে দুদকের জেরায় তানভির ঋণ কেলেঙ্কারিতে অনিয়ম ও কারও সংশিস্নষ্টতার বিষয়ে স্বীকার করেননি। তদমত্ম টিমের এক কর্মকর্তা বলেন, তানভির উচপর্যায়ের বেশ কয়েকজনের নাম বলেছেন তবে তদমেত্মর স্বার্থে এখন তা বলা যাচ্ছে না। এদিকে তুষারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি দুদককে জানায,তিনি যা করেছেন তানভিরের নির্দেশে করেছেন। দেশের ইতিহাসে ব্যাংকিং সেক্টরের সর্ববৃহৎ আর্থিক কেলেঙ্কারির দায়ে দুদকের মামলায় গত রোববার রাতে রাজধানীর মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশনের বস্নক-সি, ৮ নম্বর লেনের ১২ নম্বর বাড়ি থেকে তানভির মাহমুদ ও তুষার আহমদকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতারের পর তানভীর ও তুষারকে প্রথমে র্যাব-৪ এর কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখান থেকে অবৈধ অন্ত্র উদ্ধার করায় র্যাব সদস্য বাদী হয়ে পল্ববী থানায় অস্ত্র্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরের দিন বেলা ১১টার দিকে নেয়া হয় রমনা থানায়। রমনা থানায় দুদকের ১১ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দুপুর ১টায় পাঠানো হয় দুদকে। দুদক কর্মকর্তারা তাকে বেলা ১টা থেকে ৩টা পর্যমত্ম ২ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিএমএম আদালতে। হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভির মাহমুদের ২৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্যদিকে একই প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) তুষার আহমেদের ২৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। চারটি পৃথক মামলায় তানভির মাহমুদের ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মো. এরফান উলস্নাহহ ও কেশব রায় চৌধুরী এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে ৩টি পৃথক মামলায় তুষার আহমেদের ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মো. এরফান উলস্নাহ এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তানভীর মাহমুদের ২৯ দিনের রিমান্ডের মধ্যে রমনা থানায় দুদকের ৩ মামলায় ৮ দিন করে ২৪ দিন এবং পল্ববী থানার অস্ত্র মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদমত্ম টিমের এক কর্মকর্তা বলেন, কয়েকজনের নামও বলেছেন তানভির। তবে তদমেত্মর স্বার্থে গোপন রাখা হয়েছে।
নিউজরুম