নওগাঁর বিএনপির নেতাকর্মীরা আতংকে

0
219
Print Friendly, PDF & Email

রূপসীবাংলা নওগাঁ, ৭অক্টোবর:
নওগাঁয় জেলা বিএনপির অভ্যনত্মরীন কোন্দলকে ঘিরে রক্তয়ী সংঘর্ষ ও বাড়ীতে অগি্ন সংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলায় বিএনপির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে৷ গত ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে জেলা বিএনপির অফিসে সহিংস ঘটনাকে কেন্দ্র করে ও ওইদিন রাতে বাড়ীতে অগি্ন সংযোগের ঘটনায় নওগাঁ সদর মডেল থানায় দায়ের করা পাল্টপাল্টি মামলায় সাধারন নেতা কর্মীরা গ্রেফতার আতংকে গা ঢাকা দিয়েছে৷ গ্রম্নপিং ও দ্বন্দ এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, নেতাকর্মী ও সমর্থকরা কেহ কাউকে আস্থায় নিতে পারছে না৷ ফলে নওগাঁ জেলা বিএনপি এখন নেতৃত্ব শুন্য৷ সাংগঠনিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা৷ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি ও পৌর মেয়র নাজমুল হক সনি, শহর বিএনপির সভাপতি সাধারন সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কয়েকজন বিএনপির নেতাকর্মীদের শহরে দেখা গেছে৷ তাছাড়া বিএনপির কোন নেতাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ তারা দলীয় কার্যালয়েও আসছেন না৷ তৃনমুলের নেতাকমীরা দিক নির্দেশনাহীন৷ সাংগঠনিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ৷ তারাই শুধু বিএনপির সমর্থকদের নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচী পালন করছেন৷ তৃনমুল কর্মীরা অভিযোগ করেছেন,সেদিন বিএনপি অফিসে হামলাকারীরা ছিল বহিরাগত৷ হামলার ঘটনায় প্রত্যদর্শী অনেকেই বলেছেন, হামলাকারীদের তারা চিনতে পারেন নি৷ কারণ তারা তাদের দলীয় পরিচিত জন নয়৷ তবে এই মুহুর্তে ৮০ দশকের ছাত্র নেতারা বিএনপি রা কমিটির নামে আত্নপ্রকাশের ঘোষনা দিলে অনেকেই আদালতে জামিন নিতে শুরম্ন করে৷ প্রশাসনের প থেকে আদালত চত্বরে ব্যাপক ধরপাকড় শুররম্ন হলে আবার আতংক ছড়িয়ে পড়ে৷
জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরম্নল ইসলাম খানের নওগাঁয় আগমন এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৪র্থ কারামুক্তি দিবস উপল ে১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে শহরের কেডির মোড়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় কিছু উচ্ছৃখল বহিরাগত যুবকের হামলায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি সামসুজ্জোহা খানসহ ১৫জন নেতাকর্মীরা মারাত্বক ভাবে আহত হয়৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওইদিন রাতেই জেলা বিএনপির সভাপতি সামসুজ্জোহার অনুসারীরা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপনের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক লুটপাট সহ আগুন ধরিয়ে দেয়৷ অন্যদিকে সামসুজ্জোহা খানের উপর হামলার ঘটনাকে অসুস্থ, মাদকাসক্ত কতিপয় সন্ত্রাসী ও দলের অভ্যনত্মরে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী এজেন্ট দেশীয় অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে জেলা বিএনপির সভাপতিসহ দলীয় নেতাকমর্ীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়৷ স্থানীয় আওয়ামীলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দাবী করে বিবৃতি দেন জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলূ৷
নওগাঁ সদর মডেল থানা সুত্রে জানা যায়, জেলা বিএনপির সভাপতি সামসুজ্জোহা খান ও ছাত্রদল নেতা রাশিকুজ্জামান উজ্জলসহ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় উজ্জলের ভাই বিএনপি নেতা মোসাদ্দুর রহমান রকেট বাদী হয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মাষ্টার হাফিজুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপনকে আসামী করে সুনিদিষ্ট ২০ জন নেতা কর্মীর নাম উলেখ করে একটি মামলা করে৷ মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয় আরও ১৫/২০ জনকে৷ অন্যদিকে রিপনের ভাই মাহবুুবুল আলম নিউটন বাদী হয়ে অগি্ন সংযোগের ঘটনায় পৃথক একটি মামলা করে৷ এই মামলায় জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলুকে আসামী করে সুনিদিষ্ট ২৯ জন বিএনপির নেতাকর্মীর নাম দেয়া হয় এবং অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয় আরও ৭০/৮০ জন বিএনপির নেতাকর্মীকে৷ এ অবস্থায় পুলিশ পরস্পর বিরোধী ওই দুই মামলায় আসামী গ্রেফতারে মাঠে নামলে নওগাঁ শহরে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকমর্ীদের চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায় এবং অনেকে আত্ন গোপনে রয়েছে৷ আবার যারা পলাতক অবস্থায় ঢাকা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন তাদেরকে কাছে পেতে ও দলীয় নির্দেশনার অপোয় অধীর আগ্রহে আছেন তৃনমুল বিএনপির কর্মীরা৷
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, সামসুজ্জোহা খান নজিপুর থেকে এসে জেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ায় তাকে কেহ মেনে নিতে পারেন নি৷ তারা বলেন, বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরাম সহ অন্যান্য কমিটিতে বিতর্কীত নেতাদের প্রাধান্য দেয়ায় এবং বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের কমিটি থেকে বাদ দেয়ায় তার এই পরিনতি হয়েছে৷
নওগাঁ শহর বিএনপির সভাপতি নাছির উদ্দীন আহমেদ জানান, জেলা বিএনপির কার্যকরী কমিটির সদস্যরা শহরে অবস্থান না করায় গত তিন সপ্তাহ ধরে দলীয় কার্যালয় খোলা থাকলেও কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না৷ তবে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর তাজের মোড় শহীদ মিনারের পাদদেশে ও ৩০ সেপ্টেম্বর ব্রীজের মোড়ে শহর বিএনপির ব্যানারে কেন্দ্রীয় কর্মসুচীর অংশ হিসাবে বিােভ সমাবেশ হয়েছে৷ এতে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল আহমেদ বকুল, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পৌর মেয়র নাজমুল হক সনি, সহ-সভাপতি এ্যাডঃ রফিকুল আলম, বদরম্নল আলম নয়ন চৌধূরীসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দিয়েছে৷ নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র নাজমুল হক সনি বলেন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পড়েছে৷ নওগাঁ পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি জহুরুল ইসলাম স্বপনের সাথে আদালত চত্বরে কথা হলে তিনি জানান, ১২ সেপ্টেম্বর ঘটনার পর তিনি নিজে উদ্যোগী হয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখনরম্নল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে মোবাইলে সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে৷ কিন্তু তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় বিএনপির প থেকে কোন পদপে নেয়া হয়নি৷
প্রতিবেদক মোফাজ্জল হোসেন, সম্পাদনা আলীরাজ/ আরিফ

শেয়ার করুন