কৃত্রিম প্রজননে রুই জাতীয় মাছের ব্যবস্থাপনাও প্রজনন কৌশল

0
299
Print Friendly, PDF & Email

মজুদ পুকুরের সুবিধাসমূহ:১নং পকুর:এ পুকুরে গ্রাসকার্প, কাতলা ও থাই সরপুঁটি একসাথে মজুদ করতে হবে৷ কারণ গ্রাসকার্পের বিষ্ঠাগুলো সরপুঁটি মাছ সরাসরি খায় যে কারণে গ্রাসকার্পের পুকুরে অবাঞ্চিত গ্যাসের সৃষ্টি করতে পারে না৷ আর তা না হলে গ্রাসকার্পের মল বা বিষ্ঠা পুকুরে ব্যাপক অ্যামোনিয়া গ্যাসের সৃষ্টি করতে পারে৷ ফলশ্রুতিতে পুকুরে গ্যাসের সৃষ্টি করে ব্রুড মাছের ব্যাপক মরণের কারণ হতে পারে৷ আর সরপুঁটি একসাথে মজুদ থাকলে একদিকে গ্রাসকার্পের বিষ্ঠা খেয়ে পুকুরে অ্যামোনিয়া গ্যাস থেকে পুকুরকে রক্ষা করবে অন্যদিক সরপুঁটির বিষ্ঠা থেকে উত্‍পন্ন প্রাণী প্লাংকটন কাতলা মাছের উত্‍কৃষ্ট খাদ্য উত্‍পাদন করবে৷ পুকুরের পানির স্তর বিন্যাস করলে দেখা যায় গ্রাসকার্প অপেক্ষাকৃত নিচের স্তরের মাছ এবং কাতলা অপেক্ষাকৃত উপরের স্তরের মাছ৷ সরপুঁটি প্রায় সব স্তরেই বিচরণ করে বলে এই তিনটি মাছের একসাথে মজুদ করে ভাল ফল পাওয়া যাবে৷

২য় পুকুর:এ পুকুরে রুই, মৃগেল, সিলভারকার্প মাছ একসাথে মজুদ করা যেতে পারে৷ স্তর বিন্যাস করলে দেখা যায় মৃগেল মাছ পুকুরের নীচের স্তরের মাছ৷ আর রুই মাছ পানির মধ্যম স্তরের মাছ এবং সিলভারকার্প মাছ পানির উপরের স্তরের মাছ৷ তাই এই তিনটি জাতের মাছ একসাথে পুকুরে দিলে সব স্তরের মাছ মজুদ নিশ্চিত হয়৷

এভাবে কমপক্ষে ৬টি পুকুর থেকে যথা সম্ভব বাড়ানো যায়৷ সবচেয়ে ভাল ৯টি পুকুর যদি থাকে৷ এর কারণ প্রতি সপ্তাহে যেন একই পুকুরে বার বার জাল না টানতে হয়৷ কারণ প্রতি সপ্তাহে একই পুকুরে জাল টানলে মাছ এক ধরনের পীড়নে পড়ে তাতে ব্রুড মাছ খাবার খায় না বা খাবার ছেড়ে দেয় যে কারণে ব্রুড মাছের ডিম পরিপক্ব হতে বেশি সময় লাগে৷ সে জন্য একটি পুকুরে প্রথমবার জাল টানলে তার ২১ দিন পর ওই পুকুরে আবার জাল টানলে সবেচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায়৷ আর সে জন্যই উপরোলিস্নখিত হারে ব্রুড মাছ মজুদ করলে অন্ততপক্ষে ৯টি পুকুরের প্রয়োজন৷ আয়তাকার পুকুর হলে সবচেয়ে ভাল৷

ব্রুড মাছ মজুদের পূর্বে পুকুরের সংস্কার করতে হবে৷ প্রথমে পুকুরকে ভাল করে শুকিয়ে নীচের কাদা অপসারণ করতে হবে৷ কাদা অপসারণের পর শতাংশপ্রতি ১০ কেজি গোবর ছিটিয়ে ভাল করে লাঙল দিয়ে চাষ করে মই দিতে হবে৷ এ ক্ষেত্রে চুন দেওয়ার খুব একটা প্রয়োজন নেই৷ করণ নতুন পুকুরে পানির পি.এইচ এমনিতেই বেশি থাকে৷ তারপর মজুদ পুকুরে উপরোলিস্নখিত হারে ব্রুড মাছ মজুদ করতে হবে৷ ব্রুড মাছ মজুদের জন্য পরিবহন একটা বড় সমস্যা৷ কারণ বড় বড় মাছ পরিবহনের পর মাছের ক্ষত রোগে দেখা দিতে পারে৷ সে জন্য মাছ মজুদ পুকুরে ছাড়ার পর শ্যালো মেশিনের সাহায্যে পানির স্রোত দেয়া প্রয়োজন৷ এভাবে মাছ মজুদের পর প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে লবণ প্রয়োগ করা প্রয়োজন৷ এতে মাছ পরিবহনের পর ক্ষতজনিত রোগ থেকে মাছকে রক্ষা করা সম্ভব৷ এ প্রক্রিয়ায় ২/৩ বছরের বয়সের মাছ মজুদ করতে হবে৷ (চলবে)

শেয়ার করুন