প্রখ্যাত শান্তিবাদী আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি বেস্নয়ার ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডবিস্নউ বুশের বিচার দাবি করেছেন। ইরাক যুদ্ধের রূপকার এ দুই সাবেক নেতাকে অভিযুক্ত করে ডেসমন্ড টুটু বলেন, ‘ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত লাখ লাখ নিরপরাধ ইরাকি প্রাণ হারিয়েছেন।’ টুটু এসব মৃত্যুর জন্য বেস্নয়ার ও বুশকে দায়ী করে তাদের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের সম্মুখীন করার দাবি জানিয়েছেন। বিবিসি।
যুক্তরাজ্যের দৈনিক অবজারভারে প্রকাশিত এক লেখায় তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘এ দুই নেতা ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার ব্যাপারে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বলেছিলেন।’
ইরাকে পশ্চিমা সামরিক অভিযান বর্তমানে বিশ্বকে ‘ইতিহাসের যে কোন সংঘাতের চেয়ে বেশি অস্থিতিশীলতার’ মধ্যে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে টুটুর অভিযোগের জবাবে টনি বেস্নয়ার তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, একই রকমের অভিযোগ তিনি এর আগেও বহুবার শুনেছেন এবং এ ব্যাপারে তার নতুন কিছুই বলার নেই।
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কেপটাউনের সাবেক এ আর্চবিশপ (প্রধান ধর্মযাজক) বলেন, ‘সাদ্দামের বিরুদ্ধে পরিচালিত মার্কিন-ব্রিটিশ অভিযানই সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ ডেকে আনার জন্য দায়ী, একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য সংঘাত শুরুর পটভূমিও ইরাক যুদ্ধ।’
সামরিক অভিযানের পর ইরাকে এ পর্যন্ত যত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তার জন্য হেগের আদালতে বেস্নয়ার ও বুশের বিচার হওয়া সম্ভব বলে ওই নিবন্ধে উল্লেখ করেন টুটু। একই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক আদালতে যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে দ্বৈত নীতি অবলম্বনের জন্য পশ্চিমা বিশ্বকে অভিযুক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘হেগে এর আগে একই ধরনের অপরাধের দায়ে বিচারের সম্মুখীন হওয়া এশীয় ও আফ্রিকান নেতাদের মতো তাদেরও বিচার হওয়া উচিত।’
এর আগে ‘যুদ্ধাপরাধী’ টনিবেস্নয়ারের সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়াতে অস্বীকৃতি জানিয়ে চলতি সপ্তাহের শুরুতে জোহান্সবার্গে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব সম্মেলন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন টুটু।